রোহিঙ্গাদের বাঙ্গালী বলে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা মানবে না সরকার
নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী : রোহিঙ্গাদের সমস্যাটি বাঙ্গালী ইস্যু বলে বাংলাদেশের উপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন মিয়ানমারের সেনাপ্রধান। তবে তার বাঙ্গালী ইস্যু এই যুক্তি মানবে না সরকার। বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গাদের সমস্যা, সংকট ও এই সংকট নিরসনের জন্য মিয়ানমারের সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চাইছে। এবং তাদেরকে ফেরত দিতে চাইছে। কিন্তু মিয়ানমার সরকার তা চাইছে না। এই কারণে সরকার এই ইস্যুটি নিয়ে বেশি দূর এগুতে পারছে না। মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে কুটনীতিতে না পারলে জাতিসংঘের সহায়তায় ও আন্তর্জাতিক মহলের সহায়তা এই ইস্যুতে সমস্যার সমাধান করতে চাইছে। ইতোমধ্যে কুটনৈতিক পর্যায়ে ব্যাপক তোড়জোর শুরু হয়েছে।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার হয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের এখানে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে ও মানবিক বিবেচনা করা হয়েছে। কিন্তু সেটাকে যদি মিয়ানমার রাজনৈতিক পর্যায়ে নিয়ে যায় কিংবা সেটা নিয়ে রাজনীতি করে তাহলে খুব অন্যায় হবে। আমরা বিষয়টি সুষ্ঠু ও ভাল ভাবে সমাধান করার চেষ্টা করছি। যাতে পালিয়ে আসা মানুষেরা তাদের দেশে ফিরে যেতে পারে সেই জন্য চেষ্টা করছি। কিন্তু মিয়ানমার তাদেরকে ফেরত নিতে চাইছে না। উল্টো তারা রাজনীতি করছে।
মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইয়াং ফেস বুকে বলেন, তারা রোহিঙ্গা হিসেবে স্বীকৃতি দাবি করছে অথচ তারা কখনো মিয়ানমারের নৃগোষ্ঠী ছিল না। এটি বাঙালি ইস্যু বলেও মন্তব্য করেছেন। তিনি এটাও বলেছেন, এই সত্য প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন বলেও মনে করছেন। আরও বলা হয়েছে সেনাবাহিনী রাখাইন রাজ্যে যে অভিযান চালিয়েছে, এরমূল উদ্দেশ্য ছিল ২৫ আগস্ট পুলিশ ফাঁড়ি ও তল্লাশি চৌকিতে সন্ত্রাসী হামলার হোতাদের উৎখাত করা।
এদিকে আইনমন্ত্রী বলেছেন, শান্তিপূর্ণভাবে আমরা রোহিঙ্গা সঙ্কটের সমাধান চাই। অবৈধভাবে রোহিঙ্গাদের নির্যাতন-নিপীড়ন ও দেশত্যাগে বাধ্য করার অভিযোগে তারা আন্তর্জাতিক আদালতে যেতে পারেন। রোহিঙ্গাদের উপর যে নির্যাতন করা হচ্ছে এটি মিয়ানমারের বিষয়। কিন্তু সেখানে যেভাবে নারী শিশুসহ অন্যান্য বয়সীদের হত্যা করা হয়েছে। সেটা হতে পারে না। বাংলাদেশ নানা দিক বিবেচনা করে প্রথমে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় েিত চায়নি। কিন্তু পরে মানবিক দিকটি বিবেচনা করা হয়েছে।
মিয়ানমারের সেনাপ্রধান আরও বলেছেন, মিয়ানমারের নাগরিকদের উচিত হবে না বিদেশি সংস্থাগুলো যা বলছে তাতে কান দেওয়া। সতর্ক থাকতে হবে তাদের গোপন আঁতাতের বিষয়ে। ২৫ অগাস্টের পর থেকে চরমপন্থি বাঙালিরা রাখাইনে ৯৩টি সহিংসতার ঘটনা ঘটিয়েছে। বুথিডং ও মংডুতে একটি ঘাঁটি গড়ার চেষ্টায় চরমপন্থী বাঙালিরা এই সহিংসতা ঘটায়। তিনি এও বলেছেন, তারা রোহিঙ্গা হিসেবে স্বীকৃতির দাবি করছে, যদিও ওইরকম কোনো জাতিসত্ত্বা মিয়ানমারে ছিল না। বাঙালিদের ইস্যুটি একটি জাতীয় বিষয় এবং সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করতে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।