অপরাধী নিয়ন্ত্রণে নতুন কৌশল উত্তরপ্রদেশ সরকারের
আজকাল : ও ১৯৮০ সালে বিহারের ভাগলপুরে অপরাধীদের শায়েস্তা করতে পুলিশ তাদের চোখে অ্যাসিড ঢেলে দিত। এই ঘটনা অবলম্বনে ২০০৩ সালে তৈরি হয়েছিল বলিউড ছবি ‘ঙ্গাজল।’একইভাবে অপরাধ ও অপরাধীকে দমন করতে উত্তরপ্রদেশ সরকার নতুন কৌশল অবলম্বন করল। উত্তরপ্রদেশ পুলিশের মতে, ১২ ঘণ্টায় ১টা এনকাউন্টারই যথেষ্ট রাজ্যের অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে জানা গিয়েছে, গত ছ’সে ৪৩০টি এনকাউন্টারের ঘটনা ঘটেছে। যার অর্থ হল প্রত্যেক ১২ ঘণ্টায় ১টা করে এনকাউন্টার। যোগী আদিত্যনাথ শাসিত বিজেপি সরকার উত্তরপ্রদেশে শাসন করার আগেই রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলাকে আরও উন্নত করার প্রতিশ্রুতি দিয়ছিল। গত সপ্তাহে পুলিশের এক শীর্ষ আধিকারিক আনন্দ কুমার জানান, এনকাউন্টার এখনও চলছে। রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই জেলা পুলিশ প্রধানকে নির্দেশ দিয়েছে এনকাউন্টারের দলে থাকা পুলিশ কর্মীদের ১ লাখ টাকা পুরস্কার দেওয়ার জন্য। উত্তরপ্রদেশে বিজেপি সরকারের ছ’পূর্তি উপলক্ষে এসে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেন, ‘কের দিনে আমার রাজ্যের মানুষ নিরাপদে রয়েছেন। পুলিশ আগে ভাবত অপরাধীদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নিলে, সরকার পুলিশের বিরুদ্ধে যাবে। কিন্তু পুলিশের এই মনোভাব আমরা বদল করেছি। পুলিশ সামনে এগিয়ে নেতৃত্ব দেবে। এটাই নিয়ম।’
উত্তরপ্রদেশ পুলিসের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ২০ মার্চ থেকে ১৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিশ ৪৩১টি এনকাউন্টার করেছে এবং ১৭জন অপরাধীকে মেরেছে। ২ জন পুলিশকর্মীর মৃত্যু হয়েছে এবং ৮৮ জন পুলিশ আহত। পুলিশ গত ছ’সে গ্রেপ্তার করেছে ১,১০৬ জন অপরাধীকে। যদিও পুলিসের পক্ষ থেকে জানা গিয়েছে, এত অল্প সময়ের মধ্যে এনকাউন্টার ও গ্রেপ্তারির সংখ্যা নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয়, এটা শুধু আনুমানিক। গতবছরের তথ্য এখনও পুলিসের হাতে আসেনি। সূত্রের খবর, সোমবারই এটাওয়াতে শেষ এনকাউন্টার করে পুলিশ। খুন-ডাকাতি-অপহরণ-ছিনতাইয়ে অভিযুক্ত ২৭ বছরের সুন্দর যাদবকে এটাওয়াতে এক নদীর ধারে এনকাউন্টার করা হয়। পরে এটাওয়ার একটি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। এই ঘটনার দু’দন আগেই মুজাফফরনগর পুলিশ এনকাউন্টার করে খুন ও ডাকাতির ২৪টি মামলায় অভিযুক্ত জন মহম্মদকে। এনকাউন্টারের নেতৃত্বে থাকা শীর্ষ পুলিশ আধিকারিক অনন্ত দেও বলেন, ‘কাউকে মারতে বা আহত করতে চাই না। চেষ্টা করি গ্রেপ্তার করার। কিন্তু অপরাধীরা যদি গুলি চালায়, আমাদেরতো পাল্টা জবাব দিতেই হবে।’
উত্তরপ্রদেশ পুলিসের এই রণনীতির বিরোধীতা করে ও রাজ্য সরকারকে ভৎর্সনা করে সমাজবাদী পার্টি জানায়, রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এটি একটি ‘দজ্জনক পদক্ষেপ।’যদিও পুলিশ তাদের সীমা অতিক্রম করে গিয়েছে। বর্তমান সরকারের চাপের মুখে পড়েই হয়ত পুলিশকে এ ধরনের হত্যালীলার কাজ বাধ্য হয়ে করতে হচ্ছে।
কিন্তু এরকম চলতে থাকলে তা খুবই চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করছে সমাজবাদী পার্টি। সম্পাদনা : ইমরুল শাহেদ