‘ইংরাজি নয়, মাতৃভাষায় বেশি করে কথা বলুন ভারতীয়রা’ : উপরাষ্ট্রপতি
অরিজিৎ দাস চৌধুরি, কলকাতা থেকে : মাতৃভাষা মাতৃদুগ্ধসম। একথা যেন ভুলতেই বসেছেন ভারতীয়রা। মাতৃভাষাকে অবহেলা করে মুখে খই ফুটছে ভিনদেশি ভাষায়। এ যে ভাষার অপমৃত্যুর অশনিসংকেত তা বলাই যায়। আর তাই ভারতীয়দের নিজেদের মাতৃভাষায় বেশি করে কথা বলার পরামর্শ দিলেন দেশটির উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নায়ডু। কিংবদন্তি কর্নাটকি সংগীতশিল্পী এম এস শুভলক্ষ্মীর জন্মদিন উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন নায়ডু। সেখানেই তিনি জানান, কেন একজন তামিল ব্যক্তি আর একজন তামিলের সঙ্গে ইংরাজিতে কথা বলবেন? তেলুগু যার মাতৃভাষা আর একজন তেলুগু জানা লোকের সঙ্গে কেন তিনি ভিনদেশি ভাষায় কথা বলবেন? তার মতে, ভারতীয়দের উচিত সবসময় নিজের মাতৃভাষাকে অগ্রাধিকার দেওয়া এবং সে ভাষাতেই বেশি করে কথা বলা।
এদিন নিজের দেশের ভাষা ও ঐতিহ্যের কথা তুলে ধরে ভারতের উপরাষ্ট্রপতি বলেন, নিজের মাতৃভূমি, সংস্কৃতি, মাতৃভাষাকে সম্মান করতে হয়। যারা তা করতে পারেন না, তারা আর যাই হোন মানুষ নন। নায়ডু বলেন, নিজস্ব সংস্কৃতিকে যতœ করা, সংরক্ষণ করা আমাদেরই দায়িত্ব। সারা পৃথিবী এখন ভারতের দিকে তাকিয়ে। ভারতের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, পরিবারের প্রতি দায়বদ্ধতা, মূল্যবোধের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে পশ্চিমের দেশগুলি। আর আমরাই ভুলবশত পশ্চিমী সংস্কৃতিতে মন দিচ্ছি। তাহলে কি অন্য সংস্কৃতির দিকে তাকানোতে আপত্তি তুলছেন উপরাষ্ট্রপতি? বক্তব্যে সংযোজন করে তিনি তাই বলেন, কোনও সংস্কৃতি থেকে ভাল কিছু গ্রহণ করার মধ্যে কখনও আপত্তি থাকতে পারে না। কিন্তু তার মানে এই নয় যে নিজস্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে ভুলে যেতে হবে। মাতৃভাষার সঙ্গে যেন লেগে থাকে মাতৃগর্ভের ওম। আর তাই কখনওই তা ভুলে যাওয়া উচিত নয়, তাকে অবহেলা করা উচিত নয় বলেই জোরাল গলায় জানান উপরাষ্ট্রপতি।
প্রসঙ্গত কয়দিন আগেই আঞ্চলিক ভাষাগুলির পক্ষে সওয়াল করেছিলেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। তিনি জানিয়েছিলেন, আঞ্চলিক ভাষাগুলিকে আরও সম্মান করতে হবে। হিন্দিভাষীদের আগ্রাসনের অভিযোগ উঠেছে, বিশেষত দক্ষিণের রাজ্যগুলি এ ব্যাপারে কড়া প্রতিরোধের মনোভাব অবলম্বন করেছে। এই পরিস্থিতি পালটাতেই আরও সহনশীল হওয়ার বার্তা দিয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি। এদিন উপরাষ্ট্রপতির মাতৃভাষাকে গুরুত্ব দেওয়ার বার্তাটিতেও যেন প্রচ্ছন্নভাবে জেগে থাকল সেই আঞ্চলিক ভাষাকে সম্মান করার প্রসঙ্গটিও। সম্পাদনা : গিয়াস উদ্দিন আহমেদ