রোহিঙ্গা সমাধানে বাংলাদেশের ৬ প্রস্তাব বাংলাদেশে আসুন, রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে বর্বরতার কথা শুনুন : প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে এসে রোহিঙ্গাদের বর্বরতার কথা শুনে যান : বিশ্বনেতাদের শেখ হাসিনা
উম্মুল ওয়ারা সুইটি : মিয়ানমারে রোহিঙ্গা ইস্যুতে ঐক্যবদ্ধ হতে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি) এর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি একটি মানবিক বিপর্যয়। আমি নিজে তাদের অবস্থা পরিদর্শন করেছি। আমি নারী ও শিশুদের দুঃখ-দুর্দশার কথা শুনেছি। আমি আপনাদের সবাইকে বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। এখানে এসে মিয়ানমারের বর্বরতার ব্যাপারে তাদের কাছ থেকে শুনুন। তথ্যসূত্র: বাসস
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭২তম অধিবেশনের ফাঁকে গত মঙ্গলবার রোহিঙ্গা বিষয়ে ওআইসি’র কন্ট্রাক্ট গ্রুপের সম্মেলনে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। অন্যান্যের মধ্যে ওআইসি মহাসচিব ড. ইউসেফ আল ওথাইমেন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। শেখ হাসিনা বলেছেন, ফোরামের যে কোনও উদ্যোগে যোগ দিতে বাংলাদেশ প্রস্তুত রয়েছে। সংকট সমাধানে আপনাদের ঐক্য প্রদর্শন করুন। শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের ঢল সামলাতে বাংলাদেশের জন্য ভ্রাতৃপ্রতীম মুসলিম দেশগুলোর কাছ থেকে ‘জরুরি মানবিক সহায়তা’ চেয়েছেন।
মিয়ানমারের নাগরিক সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের ভাই সম্বোধন করে তাদের ওপর ‘জাতিগত নিধন’ অভিযান বন্ধের দাবি জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, আমরা রোহিঙ্গাদের ওপর জাতিগত নিধন অভিযানের অবসান দেখতে চাই। আমাদের মুসলমান ভাইদের এই দুর্দশার অবসান চাই। এই সঙ্কটের সূচনা হয়েছে মিয়ানমারে এবং সেখানেই এর সমাধান হতে হবে। প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা মুসলমানদের রক্ষায় নির্যাতন বন্ধ করে ‘সেইফ জোন’ তৈরিসহ ৬টি সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেয়ারও প্রস্তাব দিয়েছেন।
শেখ হাসিনা ওআইসি নেতাদের জানিয়েছেন, ২৫ আগস্টের পর থেকে স্থল ও নদীপথে সীমান্ত অতিক্রম করে ৪ লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এদের ৬০ শতাংশই শিশু। তিনি বলেন, মিয়ানমার রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় রোহিঙ্গাদের ‘বাঙালি’ বলে প্রচারণা চালাচ্ছে। অবশ্যই তা বন্ধ করতে হবে এবং দেশটিকে অবশ্যই রোহিঙ্গাদেরকে তাদের নাগরিক হিসেবে স্বীকার করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা মুসলমানদের বিরুদ্ধে সব ধরনের নির্মমতা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদেরকে সম্পূর্ণ নিরাপত্তা ও মর্যাদার সঙ্গে স্বদেশে ফেরত নিতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এর আগে আরও ৪ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে। স্থান ও সম্পদের সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও আমরা প্রায় ৮ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়েছি। বাংলাদেশ দুর্দশাপীড়িত এই লোকদের খাদ্য, আশ্রয় এবং জরুরি সেবা দিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ১৯৮২ সালে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয় এবং পরে তাদের নিজ দেশে ইন্টারনালি ডিসপ্লেস পার্সন’স (আইডিপি) ক্যাম্পে পাঠানো হয়। তার সরকার সব রোহিঙ্গাকে নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। তবে মিয়ানমার সরকার এ আহ্বানে সাড়া দিচ্ছে না। বরং রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো বন্ধ করতে সীমান্তে স্থলমাইন পেতে যাচ্ছে। সম্পাদনা : গিয়াস উদ্দিন আহমেদ