নাঈমুল ইসলাম খানের ভাবনা এবং আমাদের চিন্তার সীমাবদ্ধতা
রবিউল আলম
প্রতিটি মানুষেরই ভাবনার জগৎ আছে। মানুষ মাত্রই ভাবুক। মানুষ ভাবে। ভাবনা ছাড়া জীবন, ভাবনা ছাড়া সংসার ও রাষ্ট্র চলতে পারে না। তবে একজন শিক্ষকের ভাবনার সাথে একজন ব্যবসায়ীর ভাবনা এক হবে না। আবার একজন ব্যবসায়ী ছাড়া দেশ চলতে পারে না। মানুষ ভাবে, ভাবনার মাঝেই মানুষ বেঁচে থাকে, একেক মানুষের ভাবনার বিষয় আলাদা আলাদা এবং কর্মের বিষয়ও আলাদা আলাদা। তবে মানুষ যদি কর্মের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ভাবনার বিষয় নির্ধারণ করে ভাবতে থাকেন তবে কিছুটা হলেও প্রকৃত সমস্যার পথ আমরা খুঁজে বের করতে পারব এবং সমস্যার গভীরে পৌঁছাতে সুবিধা হয়। পৃথিবীর সকল মানুষ কি তার ভাবনার বিষয় প্রকাশ করতে পারে, না মনের ভাবনার বিষয় নিজের সংসারে প্রতিষ্ঠা করতে পারে। আমরা ভাগ্যবান এজন্য যে, আমরা মনের ভাবনার বিষয়গুলো প্রকাশ করতে পারছি, জাতির সাথে শেয়ার করতে পারছি দৈনিক আমাদের অর্থনীতি পত্রিকার মাধ্যমে। নাঈমুল ইসলাম খানের মতো একজন সম্পাদক পেয়েছি বলেই আমি আমার ভাবনাগুলো সবার সঙ্গে শেয়ার করতে পারছি। যার ভাবনার বিষয় হচ্ছে একটি সুন্দর সমাজ, শক্তিশালী রাষ্ট্র, সুশৃঙ্খল গণতান্ত্রিক একটি সমাজ জাতিকে উপহার দেওয়া। স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় যে দল উপযুক্ত, জনসাধারণ যাতে বেছে নিতে পারে, জাতিকে সহযোগিতা করা। শিক্ষক, সাহিত্যিক, প্রশাসন, কৃষক, শ্রমিক, ব্যবসায়ী, চলচ্চিত্র, ধর্ম এমন কোনো বিষয় নেই যা আমাদের অর্থনীতিতে মতপ্রকাশ করছেন না। একটি নতুন ও ছোট পত্রিকা আমাদের অর্থনীতি, শুধু নাঈমুল ইসলাম খানের ভাবনা ও পরিকল্পনার মাধ্যমে মানুষের মুখে মুখে পত্রিকাটির নাম আজ উচ্চারিত হয়। ছোট ছোট লেখার সংক্ষিপ্ত সংবাদ, দেশ ও জাতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন নাঈমুল ইসলাম খান। তার ভাবনার বিষয়গুলো জাতি গ্রহণ করছে বলেই পত্রিকাটির প্রচার ও প্রসার হয়েছে।
বাঙালি জাতির জনকের ভাবনা ছিল বাঙালি জাতির মুক্তি। শেখ হাসিনার ভাবনার বিষয় দেশের উন্নয়ন, বিশ্বে পরিবর্তন, মানব সেবার উদাহরণ সৃষ্টি করে মানুষের মাঝে বেঁচে থাকা। চিকিৎসকদের ভাবনা রোগ মুক্তি, রোগীকে সুস্থ্য করা, আইজিপির ভাবনা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা। রাজনীতির ভাবনাও আলাদা আলাদা। কেউ দেশের জন্য রাজনীতি করেন, কেউ দলের জন্য, কেউ অর্থের জন্য, কেউ পরিচিতির জন্য। কন্ট্রাক্টরি, চাঁদাবাজি, দখলদারি কর্মের জন্য ভাবনার প্রয়োজন। ভাবনা কি আর আমার মতো হবে, যে যার অবস্থান থেকে ভাবতে শিখেছে। কুসংস্কার ভাবনাগুলো পরিবর্তন করতে সাংবাদিক নবনীতা চৌধুরীকে বলতে হচ্ছে, আপনি কি আমার মতো ভাবছেন! আমরা যদি নাঈমুল ইসলাম খান ও নবনীতা চৌধুরীদের মতো ভাবতে পারতাম, তবে দেশ, সমাজ ও জাতিকে নিয়ে, ভাবনার সাথে যদি ভাবনাগুলো বাস্তবায়ন করা যেত তবে আমাদের দেশের সাথে সমগ্র পৃথিবী না জানি কত সুন্দর হতে পারত। রোহিঙ্গা সমস্যা, বিচার বিভাগ নিয়ে বিতর্ক, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, ধর্ম নিয়ে বিতর্ক, অর্থ নিয়ে লুটের কি প্রয়োজন হতো। প্রতিটি মানুষই জানে কোনো সম্পদ নিয়ে যেতে পারে না, বাঁচার জন্য অর্থের প্রয়োজন, তবে তার একটি সীমা থাকে। অসীম অর্থের প্রয়োজন হয় রাষ্ট্রের, যে রাষ্ট্র যত অর্থের মালিক সেই রাষ্ট্র ততই ক্ষমতাধর, রাষ্ট্রে অর্থের প্রয়োজনের শেষ নেই। রাষ্ট্রের উন্নয়ন হলে জনগণের উন্নয়ন হবে, জীবন মান এগিয়ে যাবে।
ব্যক্তি অর্থশালী হলে কোনো লাভ নেই, যদি প্রতিবেশী গরিব থাকে, আমার এই ভাবনার সাথে কি আর সবার ভাবনা এক হতে পারে, না পারবে। আমরা সবাই যদি দেশ নিয়ে ভাবতে থাকি, দেশের উন্নয়ন নিয়ে ভাবতে থাকি তবে ষড়যন্ত্রকারীদের কি হবে। বহির্বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে দেশ যারা ধ্বংস করতে চায় তাদের কি হবে, ওদের ভাবনার বিষয় কি আর জাতির বীর সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে মিল খুঁজে পাবে। ভাবতে ইচ্ছে করে আর ’৭১ দেখতে হবে না। রোহিঙ্গা নিয়ে অমানবিক আচরণ দেখতে হবে না। বিচার বিভাগ নিয়ে বিতর্ক হবে না। মানুষের বসবাসের জন্য সুন্দর একটি পৃথিবী হবে, যে পৃথিবীতে কোনো পারমানবিক বোমা থাকবে না। আসুন আমাদের ভাবনাগুলো এক হয়ে যাক। জানি না সেইদিন আমাদের মাঝে আসবে কিনা? তবে আশা বাঁচিয়ে রাখতে হবে। এর কোনো বিকল্প কি আছে? নেই।
লেখক: ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব, বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতি
সম্পাদনা: আশিক রহমান