রোহিঙ্গাদের কান্না- মানবতার কান্না
খ্রিস্টীয় দর্পণ ডেস্ক
সারা পৃথিবীতে মানবতার উপর আঘাত এসেছে। এই আঘাত এসেছে অনেক মানুষের মাধ্যমে, অনেক জায়গায়, অনেক ভাবে।সম্প্রতিক মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশের রোহিঙ্গাদের উপর আঘাত মানবতা বিরোধী আঘাত। চার লাখের বেশি রোহিঙ্গা জীবন বাঁড়াতে ছুটে এসেছেন বাংলাদেশে।
এখনো আসছেন অনেকে। তারা পিছনে রেখে আসছেন তাদের বাড়ি, ঘর, স্বপ্ন। শুধু মাত্র জীবন বাঁচানোর তাগিদে।রোহিঙ্গাদের উপর আঘাত আসলেও মানবতাবোধ সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যায়নি। মানবতার অপার সৌন্দর্য়ে উদাহারণ দিয়েছে বাংলাদেশে, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে। তাদের কষ্ট থেকে মুক্তি দিয়ে। বাংলাদেশ শুধু সীমান্ত উন্মুক্ত করে দেয়নি, দিয়েছে হৃদয়-দুয়ার খোলে নির্যাতিত রোহিঙ্গা শিশু, নারী, বয়স্ক সবায়কে ভালবেসে আশ্রয় দিয়ে। যারা নির্যাতিত, আহত, গর্ভবতী বয়স্ক সকলকে বাংলাদেশের প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের গ্রহণ করে মানতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। বাংলাদেশ আর্থিক দিয়ে দিয়ে দরিদ্র হলেও, রোহিঙ্গাদের গ্রহণ করে প্রকাশ করেছে হৃদয়ে এদেশের মানুষ কতটা উদার ও বড়লোক। এটা এদেশের ঐহিত্য। বাংলাদেশের এখন উচিত মায়ানমার সরকারকে চাপ প্রয়োগ করা যেন তারা তাদের দেশের নাগরিক রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতন বন্ধ করে এবং তাদের ফিরিয়ে নেয়। এটা হওয়া উচিত নিঃশর্তভাবে- রাজনৈতিক, ধর্মীয়, নৈতিক এবং ঐতিহাসিক হিসাবনিকাশ বাদ দিয়ে।অনেক বির্তকের অবসান ঘটিয়ে মায়ানমার সরকারকে তাদের নাগরিক রোহিঙ্গাদের গ্রহণ করার জন্য সীমান্ত উন্মক্ত করা উচিত। কারণ নিজ দেশে ফিরে নিরাপদে অধিকার নিয়ে তাদের (রোহিঙ্গাদের) বাঁচার অধিকার রয়েছে।রোহিঙ্গাদের কান্না আমাদের কানে পৌঁছেছে। তাদের অমানবিক কষ্ট আমরা দেখছি। তাদের ব্যথা আমাদের হৃদয়কে ব্যথিত করছে। কারিতাস বাংলাদেশের মাধ্যমে ক্যাথলিক মন্ডলী (চার্চ) রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়াতে প্রস্তুত। আমরা সরকারের অনুমতি পেলেই কারিতাসের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের জন্য খাবার, কাপড়, পানি, ওষধ সরবরাহ করে তাদের পাশে দাঁড়াবো, যা তাদের টিকে থাকার জন্য এখন খুব দরকার।রোহিঙ্গাদের পাশে থাকার জন্য পুণ্য পিতা পোপ ফ্রান্সিসকে ধন্যবাদ জানাই। কৃতজ্ঞতা জানাই আন্তর্জাতিক কারিতাসকে তাদের পূর্ণ সমর্থনে আমরা রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়াতে পারছি বলে। বর্তমান পরিস্থিতিতে, রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ানোটাই আমাদের প্রধান কাজ। আসুন আমরা সকলে মানবিক দিক চিন্তা করে নির্যাতিত, অবহেলিত রোহিঙ্গা ভাইবোনদের পাশে দাঁড়াই, তাদেরকে আমাদের ভালবাসা দিই। রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের জন্য আসুন আমরা সকলে ঈশ্বরের নিকট প্রার্থনা করি।লেখক: কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি’রোজারিও, সিএসসি, ঢাকার আর্চবিশপ