রোহিঙ্গা ইস্যুতে নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকে দৃষ্টি সবার
হুমায়ুন কবির খোকন : রাখাইনে রোহিঙ্গাদের গণহত্যা ও জাতিগত নিধন বন্ধে জাতিসংঘের সবচেয়ে শক্তিশালী সংস্থা নিরাপত্তা পরিষদ কী সিদ্ধান্ত নেয়, সেদিকেই সবার দৃষ্টি। প্রবল আন্তর্জাতিক চাপের মুখে নিরাপত্তা পরিষদ উন্মুক্ত বিতর্কে মিলিত হয়েছে। বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হচ্ছে।
এমন সময় এ বৈঠক হচ্ছে, যখন মিয়ানমারের ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের জোর দাবি উঠেছে। বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১টায় জরুরি বৈঠকে বসেছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় দুপুরে এ বৈঠক হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির পাশাপাশি সহিংসতা বন্ধে মিয়ানমারকে তাগিদ দেবে নিরাপত্তা পরিষদ। রাখাইনে দ্রুত মানবিক সহায়তা পাঠানো এবং আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের আহ্বানও জানানো হবে। সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরে নিরাপত্তা পরিষদে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেওয়ার কথা রয়েছে জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের। এর আগেই তিনি মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্মম সহিংসতা চালানোয় মানবিক বিপর্যয় তৈরি হয়েছে উল্লেখ করে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে চিঠি দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গতকাল বলেছেন রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে চীন ও রাশিয়া জাতিসংঘে নিরাপত্তা পরিষদে নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গাদের পক্ষে অবস্থান নেবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সংকটের সমাধানে এরইমধ্যে পাঁচ দফা প্রস্তাব দিয়েছেন। আমরা তার প্রস্তাবের আলোকে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে পরামর্শ পাঠিয়েছি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ১৫ সদস্যের জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে একটি কার্যকর পদক্ষেপ নেবে বলে বাংলাদেশ আশা করছে। বাংলাদেশের উদ্বেগের সঙ্গে জাতিসংঘও এরইমধ্যে এ ঘটনাকে জাতিগত নিধন উল্লেখ করে এর নিন্দা জানিয়েছে এবং আর্ন্তজাতিক সম্প্রদায় এ ঘটনাকে গণহত্যা বলে অভিহিত করেছে। বুধবার যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, রাশিয়া, চীন, সুইডেন, ইতালি, মিসর ও জাপানের রাষ্ট্রদূতদের ব্রিফ করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
রাখাইনে জাতিগত নিধন বন্ধে এ বৈঠকের আহ্বান করে নিরাপত্তা পরিষদের ৩ স্থায়ী সদস্যÑ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স এবং ৪ অস্থায়ী সদস্য দেশ। সংকট সমাধানে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরার কথা রয়েছে চীনের। সভায় সভাপতিত্ব করছে ইথিওপিয়া। ভয়েজ অব আমেরিকা জানিয়েছে, বৈঠকে নিষেধাজ্ঞা আরোপসহ মিয়ানমারের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেয়ার ক্ষেত্রে রাশিয়া ও চীন ভেটো দিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সম্পাদনা : হাসিবুল ফারুক চৌধুরী