‘বদলি তদবির’ বন্ধে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কঠোরতা
রিকু আমির : ‘বদলি তদবির’ বন্ধে চিকিৎসক-নার্স ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের প্রতি কঠোর অবস্থান নিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মন্ত্রণালয়ের একজন সচিব এ প্রতিবেদককে বলেন, কারণে-অকারণে বদলি তদবিরের চাপে মন্ত্রণালয় অতিষ্ঠ। তাই সম্প্রতি অলিখিতভাবে সব ধরণের বদলি তদবির বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ‘সব ধরণের বদলি তদবির বন্ধ’ সম্ভব কি-না প্রশ্নে তিনি বলেন, কিছু তদবির বন্ধ করা যাবে না। কিন্তু বেশকিছু তদবির-তদবিরকারী এমনভাবে আসে, মনে হয় এ যেন মাছ-মাংসের বাজার। এই ধরণের তদবিরই মন্ত্রণালয়ের কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে। অবশ্যই এসব বন্ধ করা হবে। এসব তদবির বন্ধে মন্ত্রীরও সম্মতি আছে। এদিকে বদলি তদবিরের উদ্দেশে চিকিৎসক-নার্সসহ স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারিরা সচিবালয়ে মন্ত্রীর দফতরসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য দফতরে ঘোরাফেরা করেন। সম্প্রতি এই হার বেড়ে গেছে। এটি স্বাস্থ্যমন্ত্রীর গোচরীভূত হওয়ায় তিনি অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তাই এসব ঘোরাফেরাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে সম্প্রতি স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের একান্ত সচিব (যুগ্ম-সচিব) খাজা আব্দুল হান্নান স্বাক্ষরিত একটি অফিস আদেশ জারি করা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতর, পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতর, ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর, নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদফতরের মহাপরিচালককে আদেশের অনুলিপি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক, অধ্যক্ষ, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনালয়ের সব বিভাগীয় পরিচালক, সিভিল সার্জন এবং মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল (ম্যাটস) ও ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির (আইএইচটি) অধ্যক্ষদের কাছেও অনুলিপি পাঠানো হয়েছে। আদেশ অনুযায়ীÑ পূর্বানুমতি ছাড়া কর্মস্থল ত্যাগ করা সরকারি ‘কর্মচারি (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ১৯৮৬’ অনুযায়ী দ-নীয় অপরাধ। তাই কর্মস্থল ত্যাগ করে সচিবালয়ে প্রবেশের জন্য সবার পূর্বানুমতি নেওয়া আবশ্যক। যে সমস্যা পত্রালাপ বা টেলিফোনে নিষ্পত্তিযোগ্য সে বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে না এসে পত্র ও টেলিফোনে নিষ্পত্তির জন্য মন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন জানিয়ে আদেশে বলা হয়, অন্যথায় সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক/নার্সসহ অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সচিব ক্ষোভের সঙ্গে এ প্রতিবেদককে বলেন, মন্ত্রণালয়ে না এসেও অনেক কাজ করা সম্ভব। মোবাইল, ই-মেইল কত কিছু আছে। কিন্তু কেউ কেউ মন্ত্রণালয়েই আসতে চান। এই কালচার গ্রহণযোগ্য নয়। তারা আসেন ভাবসাব দেখাতে, কারও না কারও এই-সেই তদবির বাস্তবায়নের উদ্দেশে। তদবির করে কেউ পয়সা কামাতে চান, কেউ নিজের গ্রুপ ভারি করতে চান। এসবই তদবিরই আমাদের জ্বালার কারণ। সম্পাদনা : গিয়াস উদ্দিন আহমেদ