সন্ত্রাসের বীজটা নষ্ট করতে বাংলাদেশের বন্ধু দেশগুলোকে বুঝাতে হবে
শাহরিয়ার কবীর
বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ দেশ হচ্ছে বাংলাদেশ। আমাদের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কথা ভাবতে হবে, আমাদের জনসংখ্যার চাপের কথা ভাবতে হবে, পরিবেশের কথা ভাবতে হবে। রোহিঙ্গাদের আশ্রয়ের জন্য পাহাড় কেটে ঘর-বাড়ি বানানো হচ্ছে। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কথা ভাবতে হবে। এর জন্য সুদূরপ্রসারী প্রক্রিয়ার কথা চিন্তা করতে হবে। ভারত কেন একাত্তরের আমাদের যুদ্ধ দ্রুত শেষ করতে সহায়তা করেছিল? তারা জানত এক কোটি মানুষের বোঝা, এটা তো অসম্ভব ব্যাপার। ১৯৭১ সালে ভারতের পূর্বাঞ্চলের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ধ্বংস হয়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। আমরা এগুলো খেয়াল করছি না। এই যে পাহাড় কেটে ঘর-বাড়ি বানানো হচ্ছে, এর কারণে আমাদের পরিবেশের কত ক্ষতি হচ্ছে। জনসংখ্যার তুলনায় আমাদের বনের পরিমাণ অনেক কম । মিয়ানমারে তো এই সমস্যা নেই। তাদের জনসংখ্যা অনুপাতে বন অনেক বেশি আছে। রোহিঙ্গাদের জন্য খয়রাত দিচ্ছে, এটা করলে তো আর হবে না। এই সমস্যা সমাধানের জন্য কথা বলতে হবে, কাজ করতে হবে। এখান থেকে পাঁচ লক্ষ রোহিঙ্গা কি সৌদি আরব নিতে পারে না? তারা তো বিভিন্ন দেশ থেকে লোক নিচ্ছে। তাহলে কেন এই দশ লাখ রোহিঙ্গাকে নিচ্ছে না? সবাই এই বিষয়টা শেয়ার করলে এটার গুরুত্বটা বাড়বে এবং চাপটাও বাড়বে। আন্তর্জাতিক মহলে এর জন্য গরজটা বাড়বে। সেজন্য আমরা মনে করি, শেখ হাসিনা সরকারের দ্বারা এটা করা সম্ভব। এটা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরতে হবে। এই জাতিগত নিধন যদি বন্ধ করা না যায়, তাহলে সার্বিক পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। জাতিগত নিধন বন্ধের বিভিন্ন উপায় আছে। মিয়ানমার পুরো এলাকাটাকে রোহিঙ্গা শূন্য করে দিচ্ছে। এই বিষয়গুলো আন্তর্জাতিক মহলে, বাংলাদেশের বন্ধু দেশগুলোকে বুঝাতে হবে, সন্ত্রাসের বীজটা নষ্ট করতে হবে। এখন যুদ্ধ হলে এই অঞ্চলের কোনো দেশ রেহাই পাবে না। এই জিনিসগুলো শক্তিধর দেশগুলোকে বুঝাতে হবে। এখনও যারা এই এথনিক ক্লিনজিংকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয় মনে করেন, তাদেরকে আমাদের বুঝাতে হবে, এটা মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয় এখন আর নেই। গণহত্যা বা সন্ত্রাস কখনও একটা দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় হতে পারে না। একজন মৌলবাদী বা সন্ত্রাসীকে ধরতে গণহত্যা করতে হয় না। এটা যদি আমরা বন্ধ করতে না পারি এর প্রভাব বিভিন্ন দেশে পরবে। টুইন টাওয়ারের নৃশংসতার ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে। আমাদের কি এটা বন্ধ করা জরুরি না?
পরিচিতি: সভাপতি, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি
মতামত গ্রহণ: সাগর গনি
সম্পাদনা: আািশক রহমান ও মোহাম্মদ আবদুল অদুদ