নোবেল কী শুধু মানুষ হত্যাকারীদের জন্যই বরাদ্দ!
রবিউল আলম
নিজ স্বার্থকে তুচ্ছ করে জাতির জন্য, মানুষের জন্য, শিক্ষা ও সাহিত্যের জন্য, সৃষ্টির জন্য নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয় যাতে মানব সেবায় জন্য কিছু একটা করতে আগ্রহ সৃষ্টি হয়। নোবেল পুরস্কার নিয়ে অনেক আলোচনা, সমালোচনা, তর্ক-বিতর্ক হয়েছে। তবুও নোবেল পুরস্কার ছিল সম্মানের। পৃথিবীর সকল মানুষকে কি আর নোবেল পুরস্কার দেওয়া যাবে। নোবেল নিয়ে রাজনীতি অনেক হয়েছে, এখনো হচ্ছে। দেশের জনগণ হত্যার হাতিয়ার করে নিয়েছে নোবেল, অর্থলুট ও সুদের হাতিয়ার করা হয়েছে নোবেল। দৈনিক আমাদের অর্থনীতিতে, ‘রোহিঙ্গা ইস্যুতে নোবেল বিতর্কিত’ লিখেছিলাম। আজ সেই নোবেলের বিচার হয়েছে গণআদালতে। নোবেলের বিচার হবে গরিবের টাকার সুদ খাওয়ার জন্য, দেশের মানুষকে জিম্মি করে বিদেশে নির্বাচনের টাকা পাচার করার জন্য। জাতিকে জাগ্রত করার জন্য নোবেল পুরস্কারের প্রয়োজন হয় নেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের, ভারতের জাতির জনক মহাত্মা গান্ধী সহ অনেক জাতীয় নেতায়, তাই বলে কি মানুষের মন থেকে তাদেরকে কেউ মুছে দিতে পারবে? নাকি নোবেল পুরস্কার দিয়ে জাতির জনক মহাত্মা গান্ধী ও জাতির জনক শেখ মজিবুর রহমানকে আরও উপরে উঠানো যাবে। নোবেল পুরস্কার না দিলে কি শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতির উপর থেকে ভালোবাসা ও প্রেম কম হয়ে যাবে, নাকি নোবেল পুরস্কারের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে বিদেশি দালাল বানানো যাবে। শেখ হাসিনা নোবেলের আশায় রাজনীত করেন না। মানুষ পোড়ানোর জন্য যদি নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয় অং সান সু চিকে, তবে প্রশ্ন উঠতেই পারে খালেদা জিয়াকে কি অপরাধে নোবেল দেওয়া হবে না, মানুষ পোড়ানোর বিশ্ব রেকর্ডতো খালেদা জিয়া অর্জন করেছে ২০১৫ সালে। পাশাপাশি অনেক গাড়ি পোড়ানো হয়েছে, বিদেশি পেট্রোল দিয়ে বোমা বানিয়ে আগুনের মাধ্যমে যে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে, আসিফ নজরুল হয়তো সেই ইতিহাসের সাক্ষী হতে চাইছেন না। না হয় খালেদা জিয়ার নোবেল পুরস্কার মেনে নিতে পারছেন না। আইনের শিক্ষক হয়ে, হয়তো বেআইনি জ্বালাও-পোড়াওকে সমর্থন করতে পারছেন না, যে কারনে ফেসবুকে শেখ হাসিনার নোবেল পুরস্কারের সুপারিশ করেছেন, ড. ইউনুসের সমালোচনা যাতে কম হয়। আমার ভাবতে অবাক লাগে, শেখ হাসিনার নোবেল পুরস্কারের সাথে ১০ লাখ রোহিঙ্গার আশ্রয়, দেশের অবহেলিত উপজাতিগুলোকে স্বীকৃতির মাধ্যমে শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন করে বাংলাদেশকে উন্নয়নের মডেল হিসেবে বিশ্ব দরবারে পরিচিত করে তুলেছেন। বিশ্ব মোড়লদের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি করে শান্তিরবাণী প্রতিষ্ঠা করেছেন। জীবনের মায়া ত্যাগ করে বারবার জীবনযুদ্ধে অবতীর্ণ হচ্ছেন জনতার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। নোবেল পুরস্কার কি তার প্রতিদান দিতে পারবে, নাকি নোবেল পুরস্কারের আশায় শেখ হাসিনা দেশের মানুষকে রক্ষা করার জন্য জীবন বাজি রেখে উন্নয়নের জন্য কাজ করছেন। নোবেলের আশায় কি ১০ লাখ রোহিঙ্গার জীবন রক্ষা করতে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন? বিশ্ব মোড়লদের চোখ রাঙ্গানি উপেক্ষা করে জাতিসংঘে ৫ দফা শান্তির প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন। নোবেল কী মানুষের পুরস্কারের চেয়ে বড়? নোবেল পুরস্কার সাজানো ঘরে বন্দি হয়ে থাকে, নাম লেখার আগে হয়তো নোবেল পুরস্কার প্রাপ্ত লেখা হবে। মানুষের মনের মাঝে যে পুরস্কার অর্জন করেছেন শেখ হাসিনা, বিশ্ব দরবারে শেখ হাসিনার নাম যেভাবে উচ্চারণ হচ্ছে, যেভাবে রোহিঙ্গাদের মনের মাঝে রানীর আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছেন শেখ হাসিনা, তা কি নোবেল পুরস্কার দিতে পারবে। নোবেল পুরস্কার জ্ঞানের জন্য, অর্জনের জন্য, সৃষ্টির জন্য অনেককে দেওয়া হয়েছে, যে সমস্ত মহাজ্ঞানী মানুষ সমাজে, দেশে-দেশে জাতির জন্য, দেশের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন এবং করে চলছেন। অং সান সু চি ও ড. ইউনুসের নোবেল পুরস্কার বিতর্ক সৃষ্টি করেছে, একজন মানুষ হত্যার জন্য এবং অন্যজন গরিবের কাছ থেকে সুদ খাওয়ার জন্য নোবেল বিতর্কিত হয়েছে। নোবেল পুরস্কার দিয়ে উপমহাদেশে মহাত্মা গান্ধী, শেখ মজিব, শেখ হাসিনার সৃষ্টি হয়নি। এসব মহামানব তার যোগ্যতা দিয়ে, জাতিকে ভালোবেসে জাতির জনক হয়েছেন। তারা জাতির মুক্তি ও উন্নয়নের যে পথ দেখিয়েছেন নোবেল দ্বারা সেসকল সমৃদ্ধি অর্জন করা সম্ভব নয়। নোবেলের সম্মান উঁচুতে নিতে চাইলে নোবেল পুরস্কারের সম্মান রক্ষা করতে চাইলে শেখ হাসিনার ঘরে পৌঁছিয়ে দিতে হবে। গ্রহণ করা হবে কি না, তা শেখ হাসিনা ও মহাত্মা গান্ধীর পরিবার ভেবে দেখবে।
লেখক : ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব, বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতি
সম্পাদনা: আশিক রহমান