রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জাতিসংঘকে কেন দরকার
ওয়ালিউর রাহমান
মিয়ানমারে যে এমন নৃশংস, অমানবিক আচরণ করতে পারে ভাবতে পারেনি বাংলাদেশ। মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্ব ছিল। সমস্যা, সংকটও কমবেশি ছিল, তারপরও তাদের সঙ্গে সম্পর্ক অনেক ভালো ছিল। কিন্তু এবারের মতো এত সমস্যা এর আগে কখনো হয়নি। এরকম অত্যাচার, নৃশংসতা দেখাবে তারা কেউ ভাবতে পারেনি। তবে তার প্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক যে অ্যাকশনটা হলো তা রোহিঙ্গাদের পক্ষে। কোনো সভ্য জাতির পক্ষে বিশ্বাস করা সম্ভব নয় যে, একটা জাতিগোষ্ঠীর উপর এমন নৃশংসতা হতে পারে। হত্যাযজ্ঞ, বাড়িঘর জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে দেওয়া, তাদের বাস্তুভিটা থেকে বিতারিত করা কী করেনি মিয়ানমার সেনাবাহিনী। কী অজুহাতে এমন নৃশংসতা দেখাল? মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের আক্রমণ! কিভাবে তারা বুঝল এই আক্রমণ কথিত বিদ্রোহীরা করেছে? তাহলে আমরা কি বলতে পারি না, এই ঘটনা মিয়ানমার আর্মি ঘটিয়েছে একটা অজুহাত তৈরি করার জন্য? এই ঘটনার প্রেক্ষিতে আমেরিকার প্রেসিডেন্টও বলেছেন, এই সংকটের সমাধান করতে হবে। আমরা চাই যে, এই সংকটের একটা সমাধান আসুক। এমনভাবে চলতে পারে না।
রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধানে যেতে হবে আমাদের। দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা এখানে জরুরি। তবে মনে রাখতে হবে, আমরা যেন রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে একা একা কিছু না করি। এখানে জাতিসংঘকে আমাদের সঙ্গে রাখতে হবে। ওরাই হবে আমাদের নৈতিক শক্তি। সব কর্মকা-ের সাক্ষী হিসেবে ওরা থাকবে। ওদেরকে আমরা প্রতিটি কাজে রাখব।
মিয়ানমার তার অবস্থান পরির্তন করল কি করল না তা গুরুত্বপূর্ণ নয়। মিয়ানমারের পরিবর্তনের দরকার নেই! আমরা সমস্যা সমাধানে যাব, তবে সাক্ষী থাকবে। আলোচনা করব, তৃতীয় পক্ষ হিসেবে জাতিসংঘ থাকবে আমাদের। সমস্যা সমাধান শুধু কালকের জন্যই নয়, দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা আমাদের করতে হবে। এজন্য আমাদের জাতিসংঘকে সঙ্গে নিয়ে সামনের দিকে এগোতে হবে। সমস্যা সমাধানে কাজ করতে হবে।
পরিচিতি: সাবেক রাষ্ট্রদূত ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক
সম্পাদনা: আশিক রহমান