কিশোরের কিশোরীর জন্য আলাদা নিয়ম বৈষম্য তৈরি করছে
উম্মুল ওয়ারা সুইটি : কিশোর বয়সেই মেয়েরা প্রথম পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হয়। পরিবারের প্রথম বৈষম্যের মুখে পড়ে কিশোরী। একই বয়সের ছেলেটির জন্য এক নিয়ম আর মেয়েটির জন্য আলাদা নিয়ম হয়ে থাকে। ছেলেরা এসময় কিছুটা একা একা বাড়ির বাইরে যাওয়ার অনুমতি পায়। আর মেয়েদের ক্ষেত্রে একদম উল্টো।
কিশোরী শোভা (১১বছর) জানায়, বাড়ি থেকে রাগ করে বেরিয়েছে। দুই দিন বান্ধবীর বাসায় থেকে বাড়ি ফেরার পর বাবা-মাসহ সব আত্মীয় স্বজন সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখা শুরু করে। জানতে চায় কাকে বিয়ে করেছি। অথচ তার কিছুদিন আগে আমার ভাই আমার চেয়ে বয়সে ছোট মার সঙ্গে রাগ করে চলে গিয়েছে। ১৫দিন পর সে ফিরেছে। সে ফিরে আসার পর ওর চরিত্র নিয়ে কোন সন্দেহ তৈরি হয়নি। আমি মেয়ে বলে কি রাগ করার স্বাধীনতাও থাকবে না?
শোভা বলেন, কথায় কথায় বলা হয়, ছেলেরা পারলে মেয়েরা পারবে না কেন? অথচ একুট বড় হতে না হতেই মেয়েদের পায়ে বেড়ি দিয়ে দেওয়া হয়। শোভা এখন পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। বাবা ও ভাইয়ের সঙ্গে সাইকেল শেখা নিয়ে রাগ করে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। বাবা মা অনেকটাই নিশ্চিত যে আমি কোথায় থাকতে পারি। এর আগেও আমি আমার এক বান্ধবীর বাসায় ওর জন্মদিনে বেড়াতে গিয়েছিলাম দুদিনে জন্য। বান্ধবীর মাকে আমার মা রাগ করে চলে যাওয়ার পর ফোনে জানিয়েছিল। কিন্তু তারপরও বাসা থেকে চাপ।
শোভা বলে, ফিরে আসার পর মা-বাবা বললেন, কোনো ভালো মেয়ে রাগ করে বাড়ির বাইরে যায় না। অথচ আমার ভাইকে এ কথা বলেনি। তানিয়ার প্রশ্ন- সমাজটাকি শুধু মেয়েদের শাসনের জন্য। ছেলেরা কি খারাপ হয় না।
এ বিষয়ে শিশু কিশোর সংগঠন লাভলী বায়েজীদ বলেন, একই বয়সের ছেলে মেয়েদের জন্য পরিবারের ভিন্ন মনোভাব কিশোর মনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এতে ছেলে মেয়েদের মধ্যে হিংসাত্মক পরিস্থিতি তৈরি হয়। তাই অভিভাবকদের উচিত সন্তান ছেলে হোক আর মেয়ে হোক তাদের সমতার ভিত্তিতে বড় করতে হবে। বিশেষ করে শিশুরা যখন কৈশোরের দিকে যায়, তখন তাদের মধ্যে কিউরিসিটি একটু বেশি থাকে। এসময় তাদের মধ্যে মান অভিমানের মতো বিষয় প্রকট আকার ধারণ করে। তাই পরিবারের উচিত এসময় ছেলেমেয়েদের ভালো করে গাইড করা। বৈষম্যমূলক আচরণ বন্ধ করা।