রোহিঙ্গা ফিরিয়ে নিতে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনকে অনিশ্চিত দেখছে বিএনপি
মাঈন উদ্দিন আরিফ : রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে দুই দেশের মধ্যে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের সিদ্ধান্তকে অনিশ্চিত হিসেবে দেখছে বিএনপি। গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবনে মিয়ানমারের সফররত মন্ত্রীর সাথে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠকে ঘোষিত সিদ্ধান্তের পর বিকালে এক অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। সেগুনবাগিচায় কচিকাঁচার মেলা মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা-জাসাস এর উদ্যোগে মিয়ানমানের সেনা অভিযানে রাখাইন থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ওপর নির্মিত ‘আলোকচিত্র ও প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শনী’ উপলক্ষে ‘স্টপ জেনোসাইড’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠান হয়। সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব গাজী মাজহারুল আনোয়ারের পরিচালনায় ও চিত্র পরিচালক আশরাফউদ্দিন আহমেদ উজ্জ্বলের ব্যবস্থাপনায় ভিন্নধর্মী এই অনুষ্ঠানে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের দুর্দশার চিত্র তুলে ধরা হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, এ বিষয়টি (জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ) একদম অনিশ্চিত একটি বিষয়। এই বিষয়টি এটাই প্রমাণ করছে, রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান অতিদ্রুত সরকার করতে ব্যর্থ হচ্ছে। শুধু তাই নয়, সরকার ব্যর্থ হয়েছে আন্তর্জাতিক কমিউনিটিকে কনভিন্স করতে যে, বাংলাদেশে কী ভয়াবহ পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
একই সঙ্গে সংকটের সমাধানে আবারও জাতীয় ঐক্যের আহ্বান রেখে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য আমরা বারবার বলে আসছি একটা জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার জন্য। দুর্ভাগ্য যে, এখন পর্যন্ত এই সরকার এটা করছে না। তাদের নীতি হচ্ছে জাতিকে বিভক্ত করে রাখা, জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হতে না দেওয়া। আমরা সরকারের প্রতি আবারো আহবান জানাচ্ছি, অবিলম্বে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করার জন্য জাতীয় কনভেনশন ডাকুন এবং সমস্ত দলগুলোর সমন্বয়ে বিদেশে প্রতিনিধি দল পাঠান, যাতে এই বিষয় আমরা কিছু কনভিন্স করতে পারি, বুঝাতে পারি যে আমাদের সমস্যা কী হয়েছে।
রোহিঙ্গা সংকট তুলে ধরে সরকারের ব্যর্থতা সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, একটি জাতিকে সম্পূর্ণভাবে নির্মূল করতে কী ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছে। যেকোনো মানুষ সেই দৃশ্য দেখলে কেউ স্থির থাকতে পারবে না। মনুষ্যত্বে এই অবমাননা আজকে বিশ্ব রাজনীতিতে দেখা যায় না। এই মর্মান্তিক ঘটনায় গোটা বিশ্ব উদ্বিগ্ন এবং বাংলাদেশের মানুষ আক্রমণের শিকার হয়েছে।
সাবেক এ মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সরকার ব্যর্থ হয়েছে যে, মানবতার কী চরম অপমান ঘটেছে সেটা বোঝাতে। রোহিঙ্গা সংকট বাংলাদেশের স্বাধীনতার ওপরে, সার্বভৌমত্বের ওপরে, অর্থনীতির ওপরে, পরিবেশের ওপরে, সমাজের ওপরে এর কী বিরূপ প্রভাব পড়বে সেটা বুঝাতে ব্যর্থ হয়েছে। সম্পাদনা : গিয়াস উদ্দিন আহমেদ