বিচারপতি ও আইনজীবীদের সঙ্গে আজ সাক্ষাত একমাসের ছুটিতে যাচ্ছেন প্রধান বিচারপতি
এস এম নূর মোহাম্মদ : একমাসের ছুটিতে যাচ্ছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। গতকাল সোমবার প্রধান বিচারপতির পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপতির কাছে একমাসের ছুটি চেয়ে আবেদন করা হয়। প্রধান বিচারপতির ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মো.মাহবুবুর রহমান এ প্রতিবেদককে জানান শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে প্রধান বিচারপতি ৩ অক্টোবর থেকে একমাসের ছুটি চেয়ে আবেদন করেছেন। সংবিধানের ষোড়শ সংশোধন বাতিলের রায়ের পর্যবেক্ষণ নিয়ে যখন সমালোচনা চলছে তখন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা এক মাসের ছুটির আবেদন করেছেন। এদিকে আজ প্রধান বিচারপতি, সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হবেন আইনজীবীরা। সকাল সাড়ে দশটা থেকে দুপুর বারোটা পর্যন্ত মূল ভবনের ভেতরের লনে এ সাক্ষাত অনুষ্ঠিত হবে। রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয়ে যোগাযোগ করা হলে আজকের পূর্ব নির্ধারিত সৌজন্য সাক্ষাতের বিষয়টি ঠিক থাকার কথা জানানো হয়। অন্যদিকে প্রধান বিচারপতির ছুটিতে যাওয়ার বিষয় নিয়ে আজ জরুরী বৈঠক ডেকেছে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি। আজ সকাল সাড়ে নয়টায় এ বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন এ প্রতিবেদককে বলেন, আমরা প্রধান বিচারপতির সঙ্গে দেখা করতে তার বাসভবনে গিয়েছিলাম। প্রথমে বলা হলো তিনি অসুস্থ্য। পরে বলেছেন অসুস্থ্য না, তবে প্রধান বিচারপতি কথা বলতে পারবেন না। এর আগে সমিতির সভাপতি সাংবাদিকদের বলেন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ কোনো আমলেই আদালত খোলার প্রাক্কালে প্রধান বিচারপতির ছুটিতে যাওয়ার ঘটনা ঘটেনি। কেন তিনি ছুটি নিয়েছেন তা তারা জানেন না। সাক্ষাতের পর বিষয়টা জানা যাবে।
প্রধান বিচারপতির ছুটি প্রসঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, আমি যতদূর জানি, উনি (প্রধান বিচারপতি সিনহা) আগামীকাল থেকে ছুটিতে যাবেন। অন্যদিকে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, আমি শুনেছি অসুস্থতার কথা উল্লেখ করে একমাসের ছুটি চেয়েছেন তিনি (প্রধান বিচারপতি)। প্রধান বিচারপতি ছুটিতে গেলে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করবেন। সম্প্রতি কানাডা ও জাপান সফর শেষে দেশে ফিরেছেন প্রধান বিচারপতি। সে সময়ও তার অবর্তমানে বিচপারপতি মো.আব্দুল ওয়াহ্হাব মিঞা দায়িত্ব পালন করেন।
২০১৫ সালের ১৭ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত তার চাকরির মেয়াদ রয়েছে। প্রধান বিচারপতি এমন সময় ছুটি চেয়েছেন যখন তাকে নিয়ে সরকারি দলের নেতাকর্মীরা ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন। এমনকি অবকাশ শেষে কোর্ট খোলার পর প্রধান বিচারপতির পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনের হুমকি দিয়ে রেখেছেন আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা। মূলত ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ে দেওয়া কিছু পর্যবেক্ষণ নিয়ে আপত্তি তোলে অবকাশের সময়ই আন্দোলনে নামে সরকার সমর্থক আইনজীবীরা। আওয়ামী লীগের অনেক নেতা এই ইস্যুতে প্রধান বিচারপতির পদত্যাগও দাবি করেছেন। যদিও আইনমন্ত্রী বলেছেন আইনি প্রক্রিয়ায় রিভিউ দায়েরের মাধ্যমে সরকারের আপত্তির বিষয়টি তুলে ধরা হবে। সম্পাদনা: হুমায়ুন কবির খোকন