জনবল নয়; মনোবল প্রয়োজন নির্বাচন কমিশনের
মোমিন মেহেদী
আগামী জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইসির জনবল তিনগুণ করার প্রস্তাব তৈরি হয়েছে। বর্তমানে পদ ২৮৩৩ টি, তা বাড়িয়ে ৮৬১৯ টি এবং গাড়িসহ আনুষঙ্গিক সুবিধাদি বাড়ানোর জন্য নিবেদিত থেকে কাজ করে যাচ্ছেন নির্বাচন কমিশনের প্রধান। নির্বাচন কমিশনে (ইসি) জনবল তিনগুণ করে মাঠপর্যায় থেকে সচিবালয় পর্যন্ত ৫৯৪টি দফতরের জন্য ৫ হাজার ৭৮৬টি পদ বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে মাঠপর্যায়ের ৫৯১টি দফতরে নতুন পদ সৃষ্টির কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি কয়েকটি পদ বিলুপ্তিরও প্রস্তাব করা হয়েছে। বর্তমানে ইসিতে কর্মকর্তা-কর্মচারীর পদ রয়েছে ২ হাজার ৮৩৩টি। নতুন পদ যুক্ত হলে সংখ্যা দাঁড়াবে ৮ হাজার ৬১৯টি। কিন্তু তাতে কি নির্বাচন নিরপেক্ষ হওয়ার কোনো সুযোগ গড়ে উঠবে? এমন প্রশ্ন শুধু আমার নয়, কোটি জনতার। যারা জানে যে, সম্প্রতি কমিশন সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে ‘সাংগঠনিক কাঠামো এবং টিওঅ্যান্ডই সংশোধন’ বিষয়ক কমিটির প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে এ প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়েছে। এতে জনবল বাড়ানোর পাশাপাশি গাড়িসহ আনুষঙ্গিক সুবিধাদি বাড়ানোরও কথা বলা হয়েছে। এমন প্রশ্নবোধক সময়ে উত্তর দেবেন সিইসি। তিনি যদি একবারের জন্যও বলেন যে, নির্বাচনকে নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য করতে এসব পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, তাহলে স্বাগত। কিন্তু যদি তা না হয়, তাহলে বলব যে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ইসিকে যতই শক্তিশালী করার কথা বলে এ উদ্যোগ হোক না কেন, এসব মূলত সরকারি অর্থ নষ্ট করার বাহানামাত্র। তা না হলে এমন দিনকানা দেশে, রাতকানা ইসিতে আবার জনবল বাড়ানোর কোন প্রয়োজন আছে না কি? কোনো প্রয়োজন নেই। কেননা, অতীতে নির্বাচনের পাশাপাশি জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত কার্যক্রম, সীমানা নির্ধারণ, ভোট কেন্দ্র স্থাপন, নতুন ভোটার অন্তর্ভুক্তসহ যত উদ্যেগ নেওয়া হয়েছে, প্রতিটি উদ্যেগে সরকারী অর্থ নষ্ট হয়েছে বৈ আর কোনো ফায়দা হয়নি। বরং প্রতারণার শিকার হয়েছেন নাগরিকগণ। নতুন করে আর কোনো প্রতারণা চাই না, যে কারণে নির্বাচন কমিশনে নতুন হাজার হাজার জনবল বাড়ানোর পক্ষেও নই আমি, এই জনবলকেই প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে দক্ষ করে গড়ে তুললে জোড়া-তালি মার্কা নির্বাচন সম্পন্œ সম্ভব। তবে নিরপেক্ষ, সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের প্রয়োজনে জনবল বাড়ানো যেতে পারে।
লেখক: চেয়ারম্যান, নতুনধারা বাংলাদেশ-এনডিবি
সম্পাদনা: আশিক রহমান