‘জাতিগত নিধন’ এবং রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তন
মিয়ানমারে মুসলমানরাও একদিন এমপি হয়েছিল। সেখানকার সংসদে মুসলিম প্রতিনিধিত্ব ছিল। অনেকেই উচ্চপদস্থ লোক ছিলেন। যেহেতু আমরা মুসলিম প্রধান রাষ্ট্র, আমরা শান্তিতে বিশ্বাস করি। রোহিঙ্গাদের শেল্টার আমরা সেই হিসেবে যেমন দিয়েছি, তেমনি মানবতার দিকটিও ছিল বিবেচ্য। যেমন ভারত আমাদেরকে একদিন শেল্টার দিয়েছিল। তাদেরকে ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে, তাদের নায্য অধিকার আদায়ের ব্যাপারে, আবার যাতে নিজ দেশে ফেরত যেতে পারে, সেই রকম পরিবেশ তৈরি করা দরকার। মিয়ানমার সরকার মুসলিম-বিদ্বেষী রাষ্ট্র। তাদেরকে সহযোগিতা করছে চীন ও ভারত। বাংলাদেশ একটা ক্রাইসিসে পড়–ক তার জন্যই রোহিঙ্গাদেরকে পুশ ইন করা হয়েছে এখানে। যারা বিতাড়িত হয়ে আসছে তাদের মধ্যে পুরুষের সংখ্যা খুবই কম। শিশু এবং নারীর সংখ্যা বেশি। এদেরকে সাহায্য করা আমাদের অবশ্যই কর্তব্য। সাথে সাথে তাদের জন্য পুণর্বাসন করে দেয়া উচিত। সরকারকে চেষ্টা করতে হবে, যাতে রোহিঙ্গাদেরকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো যায়। আর আমাদের উচিত তাদেরকে সাহায্য করা। সরকার এমন একটা পর্যায়ে আছে, তাদের বন্ধু যে কে সেটাই যেন নিরূপণ যাচ্ছে না। বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদে থাকলে তাদেরকে শিক্ষা , স্বাস্থ্য, চিকিৎসা সুবিধা দিতে হবে। দেশে আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে অস্থিতিশীলতা তৈরী হতে পারে। তারা বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন দেশে যখন যাবে, সেখানে কোনো অসামাজিক কর্মকান্ডে জড়িত হলে তাদেরকে বাংলাদেশি মনে করা হবে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের বদনাম হবে। এতে করে আমাদের দেশের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। একজন লোক যখন সন্ত্রাসী হয়, তাকে ধরার জন্য ১০০ জন লোককে হয়রানি করা হয়। তারা তো আসলে সন্ত্রাসী নয়, সন্ত্রাসের শিকার। আমি মনে করি, ঐতিহাসিকভাবে নবম শতক থেকে যাদের সেখানে বসবাস, আবার তাদের জন্ম যেহেতু মিয়ানমারে, সেহেতু তাদেরকে সেখানে ফিরিয়ে নিতে হবে। তার পূর্বে এখনো চলমান জাতিগত নিধন বন্ধ করতে হবে।
পরিচিতি: উপদেষ্টা, এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক
সম্পাদনা: মোহাম্মদ আবদুল অদুদ