মিয়ানমারকে বিশ্বাস করা যায় না
আবু সাঈদ খান
মিয়ানমার তো প্রথমদিকে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে রাজিই হয়নি। কিন্তু আজকে বিশ্ব জনমতের চাপে তারা খানিকটা বাধ্য হয়েছে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে। তারা এখন এ বিষয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে কথা বলছেন। এটাকে আমরা খানিকটা এক পা অগ্রগতি হিসেবে দেখতে চাই। তবে ব্যাপারটা হচ্ছে কেবলমাত্র মিয়ানমার এবং বাংলাদেশের সঙ্গে এই চুক্তিটা সম্পন্ন হলে এটার স্থায়ী সমাধান হবে বলে মনে হয় না। কেননা এখানে মিয়ানমারকে বিশ্বাস করা যায় না। কেননা তারা যেকোনো সময় বিশ্বাস ভঙ্গ করতে পারে। এবং ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশ দুই লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে তাদের দেশে ফেরত নেওয়া হয়েছিল।
কিন্তু তাদের সঙ্গে যে দুর্ব্যবহার, নিপীড়ন-নির্যাতন নেমে আসে, তারা সেখানে থাকতে পারেনি। যার ফলে তারা আবারও বাংলাদেশে চলে আসছে। এই জন্য জাতিসংঘকে এখানে যুক্ত করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করতে হবে। কেবলমাত্র দ্বিপাক্ষিকভাবে সমস্যা সমাধান করা সম্ভব নয়।
জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা বিষয়টি জোর দিয়ে তুলে ধরার পর থেকে এটা এখন আর কেবল দ্বিপাক্ষিক বিষয় নয়, আন্তর্জাতিক হয়ে গেছে। একসময় মিয়ানমারের ব্যাপার ছিল, বাংলাদেশের কাঁধে এসে চেপেছে। এটা এখন বহুপাক্ষিক এবং আন্তর্জাতিক ব্যাপার। অতএব আন্তর্জাতিক সংস্থা জাতিসংঘকেই সমাধানের উদ্যোগটা নিতে হবে। তবে তার মানে এই নয় যে, দ্বিপাক্ষিকভাবে কোনো চুক্তি হতে পারে না। দ্বিপাক্ষিক চুক্তি এবং আলাপ-আলোচনা হতেই পারে। সেই সঙ্গে জাতিসংঘকে যুক্ত করা এবং তাদের এখানে সম্পৃক্ততা জরুরি বলে মনে করি। রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের কথা বলা হয়েছে। এটা রোহিঙ্গাদের দেশে নেওয়ার ক্ষেত্রে আলাপ হতে পারে। তবে সে ওয়ার্কিং গ্রুপের মধ্য থেকেই বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা উচিত হবে যে, এখানে জাতিসংঘকে যুক্ত থাকার ব্যাপারটিও সামনে আনতে হবে। এখানে জাতিসংঘকে যুক্ত করা এবং মিয়ানমারকে স্পষ্টভাবে বলে দেওয়া যে, তোমাদের ব্যাপারে আমাদের বিশ্বাস নেই। কারণ তোমরা বিশ্বাস ভঙ্গ করো। অতএব এক্ষেত্রে গ্র্যান্টারটা কী হবে? সেক্ষেত্রে জাতিসংঘ এখানে গ্র্যান্টার হতে পারে। এই জায়গাটাতে ভাবা উচিত বলেই আমি মনে করি।
পরিচিতি: সিনিয়র সাংবাদিক
মতামত গ্রহণ: বায়েজিদ হোসাইন
সম্পাদনা: আশিক রহমান