‘জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ’ গঠন সময় ক্ষেপনের চেষ্টা
সু চির দপ্তর বিষয়ক মন্ত্রী রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার ব্যাপারে যে প্রতিশ্রুতি বা আশ্বাস দিয়েছেন তার উপর আমরা কমই ভরসা রাখতে পারি। কারণ তারা যেটা বলছে, যদি রোহিঙ্গারা তাদের পরিচয় দেখাতে পারে তাহলে তাদের ফিরিয়ে নেবে। একথাটি তারা কিছুদিন আগেও রাষ্ট্রীয়ভাবে বলেছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে রোহিঙ্গাদের তো পরিচয়পত্র ওরা দেয়নি। আবার যাদের দিয়েছে তাদেরটাও ছিল বিবেচনাধীন। তাদের তো কাগজ নেই। আবার যাদের কাছে কাগজ ছিল তাদের অনেকেই হত্যাযজ্ঞের মাঝখানে কাগজপত্র নিয়ে কজন আসতে পেরেছেন সেটাও এখন প্রশ্ন। কাজেই আমার মনে হয়, এটা সময় ক্ষেপনের একটা চেষ্টা।
রোহিঙ্গা সমস্যাটাকে মানুষের দৃষ্টিকোণ থেকে আড়াল করে দেওয়ার চেষ্টা। এবং আমি বিশ্বাস করি, মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে আন্তরিক নয়। যদি তারা রোহিঙ্গাদের ফেরতও নেয় তবে সেটা খুবই অল্প পরিমাণে। যা হবে লোক দেখানো মাত্র। বাংলাদেশ যদি শক্তভাবে এবং দক্ষতার সঙ্গে কূটনৈতিক তৎপরতা দেখাতে না পারে তাহলে রোহিঙ্গাদের অবিলম্বে ফেরত পাঠানোর আশা আমি দেখি না। আবার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের কথা বলা হচ্ছে।
আমার কাছে এটাকে সময় ক্ষেপনের একটা চেষ্টা মনে হচ্ছে। একটা ধু¤্রজাল তৈরি করার চেষ্টা। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বোঝানোর চেষ্টা যে, আমরা বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের ফেরত নিচ্ছি। তবে এখানে যেহেতু পরিচয়পত্রের বিষয়টি আসছে, আমার মতে বাংলাদেশে রোহিঙ্গারা আসার সঙ্গে সঙ্গে তাদের যদি একটা লিস্ট করে ফেলত বা অথবা বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে লিস্ট করে ফেলত, সেই লিস্টের ভিত্তিতে যদি আলোচনা করতে পারত তাহলে তাদের ফেরত পাঠানোর বিষয়টি সহজতর হতো, এখন কতটা করতে পারবে এ ব্যাপারে আমার সন্দেহ আছে।
পরিচিতি: অধ্যাপক, আইন বিভাগ, ঢাবি. ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক
মতামত গ্রহণ: বায়েজিদ হোসাইন /সম্পাদনা: আশিক রহমান