‘ফ্রিডম অব অক্সফোর্ড’ খেতাব হারাচ্ছেন সুচি
লিহান লিমা: গণতন্ত্রের জন্য দীর্ঘ লড়াইয়ের স্বীকৃতি স্বরুপ ১৯৯৭ সালে বিশ্বসেরা অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ফ্রিডম অব অক্সফোর্ড’ সম্মাননা লাভ করেছিলেন মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি। সোমবার ‘অক্সফোর্ড সিটি কাউন্সিল’ জানায় ‘সু চি আর এই সম্মান ধারণের উপযুক্ত নন’। খবর বিবিসির।
বিবিসির প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ২৫ আগস্টেরন পর থেকে রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সাম্প্রতিক হামলায় প্রাণ বাঁচাতে ৫ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে গেছে। রোহিঙ্গাদের ওপর চলমান গণহত্যা নিয়ে নীরব ভূমিকার কারণে এই সম্মান হারাতে যাচ্ছেন সু চি।
সামরিক বাহিনীর শাসনে নিমজ্জিত থাকা মিয়ানমারে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য দীর্ঘদিন সংগ্রাম করেছে সু চি, গৃহবন্দি জীবন কাটিয়েছেন। এরপর ২০১৫ সালের নির্বাচনে তার দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি পার্টি জয় লাভ করলে সু চি বৈশ্বিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ নেতা এবং স্বাধীনতাকামী মানুষের নেতায় পরিণত হন।
কিন্তু মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর জাতিগত নিধনের শিকার হয়ে হাজারো রোহিঙ্গার মৃত্যৃতে সু চির নিরবতা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম, মানবাধিকার সংস্থাসহ বিশ্বজুড়ে সমালোচিত হচ্ছে।
বিবিসির বৈশ্বিক সম্পর্ক বিষয়ক সম্পাদক জন সিম্পসন বলেন, এই পরিস্থিতিতে তাকে সম্মাননা দেয়া বিভিন্ন সংস্থাগুলোতে তিনি তার যোগ্য কি না তা নিয়ে পুন-বিবেচনা করতে শুরু করেছে।
অক্সফোর্ড সিটি কাউন্সিলের নেতা বব প্রাইস সু চি’র ‘ফ্রিডম অব অক্সফোর্ড’ খেতাব ফিরিয়ে নেওয়ার পক্ষে সকলের সমর্থন আদায় করছেন এবং এটিকে ‘অভূতপূর্ব পদক্ষেপ’ বলে উল্লেখ করেছেন।
এক সপ্তাহ আগে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়েরসেইন্ট হিউস কলেজ থেকে সু চির একটি ছবি নামিয়ে ফেলা হয়েছে। ১৯৬৭ সালে এই কলেজ থেকেই ¯œাতক সম্পন্ন করেন সু চি। ১৯৯৯ সালে সেই কলেজের প্রবেশপথে তার ছবি টাঙানো হয়।
দ্য গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়, ব্রিটেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম ট্রেড ইউনিয়ন ‘ইউনিসন’, এলএসই স্টুডেন্ট ইউনিয়ন, ব্রিস্টল ইউনিভার্সিটি এবং অক্সফোর্ড সিটিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যারা এক সময় সু চি কে সম্মাননা প্রদান করেছিলেন তারা এসব সম্মাননা প্রত্যাহার বা পুর্নবিবেচনার পরিকল্পনা করছেন। এছাড়া বিগত ৩০ বছরে গ্লাসগো, বাথ, কেমব্রিজসহ ব্রিটেনের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় সু চিকে বিভিন্ন সম্মানসূচক ডিগ্রি ও খেতাব প্রদান করেছে যা এখন পুনরায় যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। সূত্র: বিবিসি, দ্য গার্ডিয়ান।