স্ত্রী ও আত্মীয় পরিচয়ে নারী-শিশু পাচার
আনিসুর রহমান তপন : স্ত্রী ও নিকট আত্মীয় সাজিয়ে শুধু মাত্র অর্থ লোভে বাংলাদেশ থেকে নারী-শিশু পাচার করছে পাচারকারিরা। পাশ্ববর্তী দেশ ভারতসহ পাকিস্তান ও মধ্যপ্রাচ্যে পাচার করছে তাদের। এমন অভিযোগ জানিয়ে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা। এতে নারী-শিশু পাচার রোধে সুপারিশসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শুধু মাত্র অর্থ লোভের কারণেই এমন জঘন্য কাজ করছে পাচারকারিরা। ফলে নারী-শিশু পাচারের সময় পাচারকারিরা বিভিন্ন সময় নানা রকম কৌশল নিয়ে থাকে।প্রতিবেদনে বলা হয়,পাচারের লক্ষ্যে দুর দূরান্ত থেকে সংগ্রহ করা নারী-শিশুদের প্রথমে দূর পাল্লার পরিবহন, কখনও লোকাল গাড়ি অথবা ট্রেন দিয়ে সীমান্ত এলাকায় জড়ো করা হয়। বেনাপোল এলাকায় প্রবেশের আগে শার্শ, কাগজপুকুর, নাভারণ এবং বাগআচড়ায় গাড়ি থেকে নামানো হয়। সেখানে আগে থেকে অপেক্ষায় থাকা দালালরা স্ত্রী, নিকট আত্মীয় বানিয়ে পরিচিতদের বাসায় বেড়াতে যাচ্ছে এমন কথা প্রচার করে সীমান্ত পর্যন্ত নিয়ে থাকে। এসময় তাদের হাতে কখনও কখনও মিষ্টি ও ফলের প্যাকেট দিয়ে সাধারণের চোখে ধোকা দেয়। পাচারকারিরা এসব নারী-শিশুদের সরাসরি সীমান্ত দিয়ে পাচার না করে বিজিবি-বিএসএফ এর অসৎ সদস্যদের সহায়তায় সুবিধাজনক সময়ে ভারতে পাচার করে থাকে। সেখানে নারী ও যুবতীদের বিভিন্ন পতিতালয় এবং শিশুদের নামি-দামি হাসপাতালে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিক্রির জন্য পাঠানো হয়।এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, নারী-শিশু পাচার রোধে সরকার জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। এজন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন বিভাগ ও সংস্থাকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া আছে। গত মে, ২০১৬ থেকে জুলাই, ২০১৭ পর্যন্ত শুধু যশোর সীমান্তেই ৪৭০ জনকে উদ্ধার করেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। এদের মধ্যে ৩৫০ জন নারী ও ১২০ জন শিশু রয়েছে উল্লেখ করে আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, আমরা এই ব্যাপারগুলোতে কোনো রকম ছাড় দিচ্ছিনা। এ সংক্রান্ত যে কোনো খবরই আমাদের কাছে আসুক না কেন আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। তেমনি সীমান্ত পথে বা বিমান এবং নদী পথেও যদি কেউ পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকে তাদের বিষয়ে এবং কিভাবে পাচার হয়ে থাকে, সেসব বিস্তারিত আইন-শৃঙ্খা বাহিনীকে জানানো হয় এবং অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়। সে অনুযায়ী আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। সম্পাদনা : উম্মুল ওয়ারা সুইটি