অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের সুযোগ কাজে লাগানোর আহ্বান লাগার্দের
অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ায় গতি এসেছে, যা অন্যতম একটি সুযোগ বলে উল্লেখ করেছেন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রধান ক্রিস্টিন লাগার্দে। তিনি মনে করেন, নিজেদের অবস্থান আরো উন্নত পর্যায়ে নিয়ে যেতে সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়নের সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে এই পুনরুদ্ধার অগ্রযাত্রা। হার্ভার্ড’স কেনেডি স্কুল অব গভর্নমেন্টে গত বৃহস্পতিবার দেয়া বক্তৃতায় এ কথা বলেন আইএমএফ-প্রধান। বণিক বার্তা
ক্রিস্টিন লাগার্দে তার বক্তব্যে বলেন, দীর্ঘ প্রত্যাশিত বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার কার্যক্রম চলছে। বিভিন্ন দেশ এখন নতুন অথবা টেকসই অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার দেখতে পাচ্ছে। এর সঙ্গে ব্যাংকগুলোতে অনেক স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে; বাড়ছে ব্যবসায়িক আস্থা। পুনরুদ্ধারের এ সুযোগ গ্রহণ করে দেশগুলো কি সবার জন্য সমান সহায়ক হবে এমন অর্থনীতি গড়ে তুলতে পারবে? বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে বার্ষিক বৈঠকের এক সপ্তাহ আগে এমন মন্তব্য করেন আইএমএফ প্রধান। ১৮৯ সদস্য দেশ নিয়ে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে বৈঠকে আইএমএফ বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি নিয়ে দেয়া পূর্বাভাস হালনাগাদ করবে।
বিশ্বে আসন্ন বিপদের বিষয়টিও সামনে নিয়ে এসেছেন ক্রিস্টিন লাগার্দে। এর মধ্যে শ্লথ প্রবৃদ্ধি, উন্নত দেশগুলোয় ক্রমবর্ধমান বৈষম্য ও প্রযুক্তিগত পরিবর্তন গ্রহণে অক্ষমতাকে তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, অনেক দেশই রাজনৈতিক মেরুকরণের শিকার হচ্ছে। আইএমএফ প্রধান বলেন, দেশগুলো অলস বসে থাকলে বিশ্ব অর্থনীতিতে ভালো একটি পুনরুদ্ধারের বিষয়টি পুরোপুরি অপচয় হবে।
যার ফলে দুর্বল প্রবৃদ্ধি, শ্লথ কর্মসংস্থান, সামাজিক নিরাপত্তা জাল ভেঙে পড়বে এবং আর্থিক ব্যবস্থার সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ সংকটের সম্ভাবনা উন্মোচিত হয়ে যাবে।
প্রবৃদ্ধি সহায়ক মুদ্রা ও আর্থিক নীতিমালা গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে লাগার্দে আরো বলেন, দেশগুলোকে অবকাঠামো, গবেষণা ও উন্নয়ন-বিষয়ক খাতে বিনিয়োগ করতে হবে। এতে করে একদিকে উৎপাদন সক্ষমশীলতা ও চাহিদা বাড়বে, অন্যদিকে কমবে বেকারত্ব। তিনি মনে করেন, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে ব্যয়বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রগতিশীল করব্যবস্থা চালু করলে তা বৈষম্য কমাতে অনেকটাই সহায়ক হয়ে উঠবে।
আইএমএফের গবেষণায় দেখা গেছে, মাত্রাতিরিক্ত বৈষম্য প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধির পথে বাধা সৃষ্টি করে। শুধু তাই নয়, এটি একটি দেশের অর্থনৈতিক ভিত্তিকে দুর্বল করে দেয়। এছাড়াও সমাজের মধ্যে বিশ্বাস নষ্ট করে দেয়, উসকে দেয় রাজনৈতিক উত্তেজনা।
লাগার্দে তার বক্তৃতায় জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়েও কথা বলেন। প্রতিটি দেশের অর্থনীতি ও নাগরিকের জন্য জলবায়ু পরিবর্তন রীতিমতো হুমকিস্বরূপ বলে উল্লেখ করেন তিনি।
আইএমএফ প্রধান এ প্রসঙ্গে বলেন, বার্ষিক বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১ ডিগ্রি বাড়লে বাংলাদেশের মতো দেশগুলো মাথাপিছু প্রায় ১ দশমিক ৫ শতাংশ জিডিপি হারাবে। সম্পাদনা : মোনা হক