জটিল রাজনীতি বুঝতে গিয়েই প্রাণ গেল সুদীপ্ত বিশ্বাসের
মাহফুজ উদ্দিন খান : নিজের ফেসবুক পাতায় গত রোববার চট্টগ্রাম নগর ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক সুদীপ্ত বিশ্বাস লেখেন, ‘রাজনীতি বড়ই জটিল জিনিস। একসময়কার কথিত ডাস্টবিন এখন ফুলের বাগানের সৌরভ ছড়াচ্ছে।’ এর তিন দিন পর বৃহস্পতিবার দুপুরে ফেসবুকে আরেকটি স্ট্যাটাস (মন্তব্য) দেন তিনি। লেখেন, ‘অপেক্ষায় রইলাম’। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপেক্ষার জবাব হয়ে ধরা দিল ‘মৃত্যু’। শুক্রবার সকালে তাকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে রড ও লাঠিসোঁটা দিয়ে পিটিয়ে খুন করে দুর্বৃত্তরা।
সুদীপ্তদের বাসা চট্টগ্রাম নগরের দক্ষিণ নালাপাড়া এলাকায়। শুক্রবার সকাল সাতটার দিকে দুই যুবক বাসায় এসে সুদীপ্তকে জানান, তার এক বন্ধুর বাবা মারা গেছেন। খবরটি শুনেই তাদের সঙ্গে বেরিয়ে যান তিনি। এর ১০ মিনিট পর চিৎকার শুনে তার মা টিনের ঘরের বাসা থেকে বেরিয়ে গলির মুখে যান। বাসা থেকে ওই পথের দূরত্ব প্রায় ১০০ ফুট। সেখানে ছেলেকে রাস্তার পাশে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন তিনি। পরে তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় তার মৃত্যু হয়। তার মাথায় গুরুতর আঘাত ছিল বলে জানান চিকিৎসকরা।
চট্টগ্রাম নগর ছাত্রলীগের এক নেতা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, আওয়ামী লীগের স্থানীয় এক নেতার সঙ্গে কিছুদিন আগে বিরোধে জড়িয়ে পড়েছিলেন সুদীপ্ত। ওই নেতা নগরে লালখানবাজারে থাকেন। ফেসবুকে সুদীপ্ত এবং ওই নেতার অনুসারীরা জটিল রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে পাল্টাপাল্টি মন্তব্য করতেন। হত্যাকা-ের পেছনে এই ঘটনা কাজ করতে পারে বলে ধারণা তার। ওই নেতার নাম উল্লেখ না করে বিষয়টি পুলিশকে তদন্ত করে দেখতে বলেন তিনি।
চট্টগ্রামের নালাপাড়া এলাকাটি সদরঘাট থানার ওসি মর্জিনা আকতার বলেন, সুদীপ্ত হত্যাকা-ের পেছনে ব্যক্তিগত বা রাজনৈতিক শত্রুতা থাকতে পারে বলে তারা ধারণা করছেন।
ছেলে হত্যায় কাউকে সন্দেহ করেন কি না, সাংবাদিকদের এই প্রশ্নে সুদীপ্তর বাবা মেঘনাথ বিশ্বাস বলেন, ‘এত কিছু কেন জানতে চাচ্ছেন। আমরা তো জানি, ছেলের বিচার হবে না।’ তথ্যসূত্র : প্রথমআলো