আর্থিক সংকটে অ্যাকাডেমিক গবেষণা কার্যক্রম
আরিফুর রহমান তুহিন : একটি দেশের গবেষণা কার্যক্রমের অন্যতম প্রধান কাঠামো হিসেবে শিক্ষালয়কে ধরা হলেও আর্থিক সঙ্কটের কারণে যথাযথ গবেষণা কার্যক্রম চালাতে পারছেনা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জোড়াতালি দিয়ে গবেষণা চালালেও বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গবেষণা কার্যক্রম নেই। এমনকি পর্যাপ্ত অর্থাভাবে গবেষণা থেকে পিছিয়ে আছে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষরা বলছে, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে বিষয়টি বারবার অবহিত করা হলেও কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেনা তারা।
বর্তমানে সাড়া দেশে ৩৮ টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। যেখানে কয়েক লাখ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে থাকে। সেগুলোতে পাঠদান করা শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, অনেকগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ে ল্যাব আছে কিন্তু সরঞ্জামাদি নেই। আবার যেগুলো আছে তাও সেকেলে বা অপর্যাপ্ত। তাই তাদের গবেষণা কার্যক্রম করতে না পারায় হাতে কলমে জ্ঞান অর্জনের দিক থেকে পিছিয়ে পড়েছেন। বিষয়টি নিয়ে তাদের প্রশাসনকে অবহিতকরা হলেও তারা কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের এক ছাত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানায়, ঢাকা বিশ্বাবদ্যালয় দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠ হিসেবে গণ্য করা হলেও তাদের ল্যাবের অবস্থা সর্বনি¤œ পর্যায়ে। পরিবেশগত সমস্যা ছাড়াও তাদের যথেষ্ট পরিমাণ কেমিক্যাল না থাকায় সকল বিষয়ে এখানে হাতে কলমে গবেষণা করা সম্ভব হয়না। অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে শিক্ষার্থীরা চাঁদা তুলে প্রয়োজনীয় কেমিক্যাল কিনে কার্য সম্পাদনের চেষ্টা করেন। তবে এখন কেমিক্যালের দাম অনেক বেশি হওয়ায় স্বল্প পরিমান দিয়ে সকলের কাজ শেষ করতে হয়। তাই তাদের অভিজ্ঞতার ঘাটতি থেকেই যায়।
বিষয়টি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অজৈব রসায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান ড. আনওয়ারুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছর কেমিক্যালের দাম বাড়ে, ছাত্রের সংখ্যা বাড়ে কিন্তু গবেষণার জন্য বরাদ্দ বাড়েনা। ২০ বছর আগে বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের যে বরাদ্দ দিত, এখনও প্রায় সেই একই পরিমাণে বরাদ্দ দিচ্ছে। অথচ কেমিক্যালের দাম শতগুণ বেড়েছে। সরকারকে বুঝতে হবে, শিক্ষালয় হল নিজেকে ঝালাই করে নেওয়ার প্রধান কেন্দ্র। শিক্ষার্থীরা যদি শুরুতেই পিছিয়ে পরে তাহলে গোটা জাতি পিছিয়ে পড়বে। তিনি মনে করেন, বাংলাদেশ যেহেতু একটি মধ্যবিত্ত রাষ্ট্র তাই সরকারের উচিত এই দেশের উন্নতির জন্য গবেষণা খাতে আরও বরাদ্দ দেয়া। বিশেষ করে দেশের প্রত্যেকটি শিক্ষাকেন্দ্রে আলাদা ল্যাব ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের যোগান দেয়া। সম্পাদনা : মোহাম্মদ রকিব হোসেন