মানসিকভাবে সুস্থ না হলে শারীরিকভাবেও সুস্থ থাকব না : ড. তানিয়া রহমান
তাসকিনা ইয়াসমিন : আজ বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস। প্রতিবছরের মতো বাংলাদেশও যথাযোগ্য উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে দিবসটি উদযাপন করছে। দিবসটি উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টায় র্যালি অনুষ্ঠিত হবে। দিবসটি ঘিরে সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. তানিয়া রহমান দৈনিক আমাদের অর্থনীতিকে তার অভিমত ব্যক্ত করেছেন। বাংলাদেশের মানসিক স্বাস্থ্য পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি বলেন, মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়টি আসলে ছোট বাচ্চা থেকে শুরু করে বৃদ্ধ পর্যন্ত বিস্তৃত। এখন বিশ্বজুড়ে মানসিক স্বাস্থ্য দিবসটি পালিত হচ্ছে। প্রত্যেক বছর একেকটা স্লেøাগান নিয়ে দিবসটি পালিত হয়। এবছরের স্লোগানÑ মেন্টাল হেলথ ইন দ্য ওয়ার্কপ্লেস (কর্মক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্য)। বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ কেননা এর সঙ্গে পারিবারিক ক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টিতেও প্রভাব পড়ে। মানসিক স্বাস্থ্য দিবসটি ঘিরে গতবারের থিম ছিলÑ সাইকোলোজিক্যাল ফার্স্ট এইড। ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএইচও) ডিপ্রেশন লেটস টক শিরোনামে একটি ক্যাম্পেইন চালাচ্ছে।
তিনি বলেন, মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টি বিবেচনা করলে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে দেখা যায়, বিভিন্ন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে আমরা যাই। বিভিন্ন ধরনের চাপ, মানসিক চাপ, অস্থিরতা এগুলো থাকে। এখন তরুণ বয়সেই মানুষের হার্ট অ্যাটাক, ব্লাডপ্রেসার, মেন্টাল ডিজঅর্ডারের মতো রোগ হচ্ছে। কর্মক্ষেত্রের পরিবেশের উপরও কর্মক্ষমতা অনেকাংশে নির্ভর করে। এখন শিশুদের, তরুণদের অস্থিরতাটাও দেখছি। ফলে অনেক ক্ষেত্রেই মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টি প্রমোট করা জরুরি হয়ে পড়েছে। আমরা এখনো কর্মক্ষেত্রে ‘আনস্টেবল’ অবস্থায় আছি। এ কারণে আমাদের কর্মক্ষেত্র, বাসস্থান, রাষ্ট্রের ক্ষেত্রেও স্থিরতা প্রয়োজন। আমাদের সব ক্ষেত্রে সবাইকে উৎসাহিত করতে হবে। সবার সক্রিয় অংশগ্রহণ দরকার। কী কারণে আমরা অস্থির থাকছি, আমাদের চাওয়াগুলো পূর্ণ হচ্ছে না কেন? বিষয়গুলো আমাদের খুঁজে বের করতে হবে। মূল সমস্যাকে নির্দিষ্ট করতে না পারলে সমস্যা থেকেই যাবে। আমাদের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, সহনশীলতা, ধৈর্য্য ও সহ্যক্ষমতা কমে যাচ্ছে। কর্মক্ষেত্রে, পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে এ ব্যাপারে সচেতনতা বাড়াতে হবে। আমরা মানসিকভাবে সুস্থ না হলে শারীরিকভাবেও সুস্থ থাকব না। আমরা বাংলাদেশিরা এখন যতটুকু চাপ নেয়া যায় এর চেয়ে বেশি চাপ নিয়ে ফেলছি। এ অবস্থার পরিবর্তন করা দরকার। কোনো একটা কিছুতে ভুল করে ফেললে সেটা নিয়ে আমরা অনেক চাপ নিয়ে ফেলি। এটা করা যাবে না। মনে রাখতে হবে, আমি মানুষ। আমার মাধ্যমে ভুল হতেই পারে। ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। জীবনটাকে আবার সুন্দর করে গড়ে তুলতে হবে। মনে রাখতে হবে আমরা যদি মানসিকভাবে ভালো থাকি তাহলে আমরা শারীরিকভাবেও সুস্থ থাকব এবং পরিবার, সমাজ, কর্মক্ষেত্র ও রাষ্ট্র সকলের জন্য কাজ করতে পারব। সম্পাদনা : হাসিবুল ফারুক চৌধুরী