রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে মায়ানমারের উপর আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি করতে হবে : মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যান
ফেরদৌস রায়হান : রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিকভাবে জনমত তৈরি করতে কাজ করাই বাংলাদেশের এ মূহুর্তে করণী সেই সাথে গণসচেতনতা তৈরি করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক ।
গতকাল মানবাধিকার কমিশন কনফারেন্স হলে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন । তিনি আরো বলেন, মায়ানমার একাধিক বার বাংলাশের আকাশসীমা অতিক্র করেছিল। তাদের উদ্দ্যেশ ছিল এ দেশের সাথে যুদ্ধ সংগঠিত করা যাতে রোহিঙ্গা সংকট আরাল করা যায় । তিনি আরো বলেন , রোহিঙ্গাদের উপর যে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে তা পৃথীবির ইতিহাসে বিরল। রাখাইন রাজ্যে মায়ানমার সরকার রোহিঙ্গারা কোন নাগরিক কোন সুযোগ দিত না।
কমিশন চেয়ারম্যান বলেন, রোহিঙ্গা নির্যাতন বন্ধে বারবার মায়ানমার সরকারের প্রতি আহব্বান জানান হলেও তারা কিছুতেই নির্যাতন বন্ধে করছে না। এখনো বাংলাদেশের সিমান্ত দিয়ে রোহিঙ্গা প্রবেশ করছে ।
কমিশনার মনে করেন, রোহিঙ্গা মুসলমানদের মানবাধিকার রক্ষা করার দায়িত্ব মিয়ানমার রাষ্ট্রের। মিয়ানমার সরকারকেই এই ধ্বংসজ্ঞ বন্ধ করতে হবে।
রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার নিশ্চিত করতে বাংলাদেশকে সহায়তা প্রদান ও তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে বলিষ্ট ভূমিকা রাখার জন্য ইউএনএইচসিআর প্রতি আহ্বান জানান মানবাধিকার কমিশনার ।
তিনি জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে তাদের মানবধিকার সুরক্ষার লক্ষে বাংলাদেশ সরকার সর্বাতœক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে যদিও কিছু অব্যবস্থাপনা রয়েছে।
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে কমিশনের পক্ষ থেকে বিশেষ সুপারিশমালা প্রদান করা হয়। ১. রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সরকার কর্তৃক পরিচালিত চলমান নির্যাতন অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। ২. জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে মিয়ানমার অভ্যন্তরে রোহিঙ্গাদের জন্য বাফার জোন তৈরি করা। ৩. জাতিসংঘের উপস্থিতিতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সরকারের মধ্যে দি – পাক্ষিক আলোচনার উদ্যোগ গ্রহন করা । ৪. বাংলাদেশে বসবাসরত দশ লাক্ষ রোহিঙ্গার মৌলিক মানবাধিকার রক্ষা করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কর্তৃক বাংলাদেশকে সহায়তা প্রদান । ৫ . কোন ধরনের জটিলতা সৃষ্টি না করে কফি আনান কমিশনের প্রতিবেদন বাস্তাবায়ন পূর্বক মিয়ানমার রাষ্ট্র কর্তৃক রোহিঙ্গাদের নাগরিত্ব প্রদান
৬ . প্রয়োজনে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ কর্তৃক মিয়ানমারের বিরুদ্ধে কুটনৈতিক /বানিজ্যিক / অস্ত্র রপ্তানির ক্ষেত্রে অবরোধ আরোপ করা ৭ . মিয়ানমার সেনাবাহিনী রাখাইন রাজ্যে যে গণহত্যা ও ধ্বংসযঞ্গ চালিয়েছে , রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নিয়েছে, তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে এ কারণে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ কর্তৃক আন্তর্জাতিক আদালতে তাদের বিচারের উদ্যোগ গ্রহন করা ।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, সার্বক্ষণিক সদস্য মো. নজরুল ইসলাম । আকতার হোসেন সদস্য সহ মানবাধিকার কমিশনার অনান্য কর্মকর্তা । সম্পাদনা : ইয়াছির আরাফাত