জোটের আসনে দলীয় প্রার্থী চায় আওয়ামী লীগের তৃণমূল
আল হেলাল শুভ : দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শরীকদের সঙ্গে রফায় ছেড়ে দেওয়া আসনে এবার দলীয় প্রার্থী চায় আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। আওয়ামী লীগের তৃনমূল নেতারা বলছেন, শরিক দল থেকে হওয়া সংসদ সদস্যদের কাছে পান না আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। এ জন্য জোটের ওই আসনগুলোর বেশ কয়েকটিতে আওয়ামী লীগের তৃনমূল নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে।
আওয়ামী লীগের তৃনমূল নেতারা বলছেন, যারা দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শরীকদের কোটায় সংসদ সদস্যদের মধ্যে অনেকেই প্রথমবার নির্বাচন করেছেন। জোটের শরিকরা নৌকা মার্কা নিয়ে নির্বাচিত হলেও আওয়ামী লীগ স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সাথে সম্পর্কও রাখেন না। ফলে ক্ষোভ দেখা যায় আওয়ামী লীগের তৃনমূল নেতাদের মধ্যে। আওয়ামী লীগের মাঠ নেতারা বলছেন, বিএনপিবিহীন দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোটের প্রার্থীদের টিকিট দেওয়া হলেও আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যাতে দলের কেন্দ্র থেকে যাচাই করেই মনোনয়ন দেওয়া হয়। নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁও) আসন ২০১৪ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেয় আওয়ামী লীগ। ফলে এলাকার রাজনীতিতে নতুন মুখ লিয়াকত হোসেন খোকা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে এ আসনে নির্বাচিত হয়েছিলেন আওয়ামী লীগের আব্দুল্লা আল কায়সার। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁও) আসনে মনোনয়ন চাইবেন তিনি।
পঞ্চগড়-১ আসন দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোটের শরিকদের ছেড়ে দেওয়া হয়। ফলে আওয়ামী লীগের টিকিট চলে যায় জাসদের ঘরে। কিন্তু ওই আসনে জোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি মজাহারুল হক প্রধান। একইভাবে সাতক্ষীরা-১ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান শেখ নুরুল ইসলাম। কিন্তু জোটের কারণে তাকে ছাড় দিতে হয়। ওই আসনে নৌকা নিয়ে নির্বাচন করেন ওয়ার্কার্স পার্টির মুস্তফা লুৎফুল্লাহ। এ আসনে এবার শেখ নুরুল ইসলাম জোর প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন।
ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে বর্তমানে রয়েছেন জোট সংসদ সদস্য ওয়ার্কার্স পার্টির ইয়াসিন আলী। এ আসনে মহিলা সংসদ সদস্য সেলিনা জাহান লিটা ও আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ইমদাদুল হক এবার মনোনয় চাইবেন। সেলিনা জাহান লিটা বলেন, এ আসনটি দীর্ঘ দিন ধরেই আওয়ামী লীগের বাইরে জোটের সংসদ সদস্য হয়েছে। যদিও এখানে আওয়ামী লীগের অবস্থা আগে অনেক ভাল। তারপরও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা যাকে এখান থেকে মনোনয় দিবেন আমরা তার জন্যই কাজ করবো।
ঢাকা-৪ আসনে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান তৎকালীন এমপি এডভোকেট সানজিদা খানম। কিন্তু দলের নির্দেশে তাকে নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে দূরে থাকতে হয়। এ আসনটি জাতীয় পার্টিকে ছাড় দেওয়া হয়। এখানে আওয়ামী লীগের পূর্ণ সমর্থন নিয়ে লাঙ্গল প্রতীকে নির্বাচন করেন জাতীয় পার্টির সৈয়দ আবুল হোসেন বাবলা। এবার এই আসন মনোনয়ন পেতে নিয়মিত গণসংযোগ করে চলেছেন সানজিদা খানম ও ড.আওলাদ হোসেন।
দশম সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৭ আসনে আওয়ামী লীগ কোনো প্রার্থী দেয়নি। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জন্য আসনটি প্রথমে ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর এরশাদ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করলে বিএনএফের আবুল কালাম আজাদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। কিন্তু এবার এ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী চান দলের তৃনমূল। সম্পাদনা : শাহানুজ্জামান টিটু