ব্লু-গেম : আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই
ডা. মোহিত কামাল
ব্লু হোয়েল গেম নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। ঘরে ঘরে মা-বাবা একটু সতর্ক হলেই হবে। গেমটা একধরনের আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। নামটাও জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। নামটা উচ্চারিত হোক এটা আমি চাই না। একজন অসুস্থ মনোবিজ্ঞানী, যাকে আমি কিলার বলব, তিনি ব্লু হোয়েল গেমটা আবিষ্কার করেছেন। যারা একটু হতাশাগ্রস্ত, যারা বিচ্ছিন্ন মা-বাবার কাছ থেকে তারাই এর শিকার। এদেরকে টাস্ক দেওয়া হয়। ব্ল্যাকমেইলিংও করা হয়। একেকটা টাস্ক করলে গ্রেড আসে। উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। তারা ধীরে ধীরে ধাপের পর ধাপ যেতে থাকে। এই মনোবিজ্ঞানী অত্যন্ত কৌশলে ভিকটিমের মনকে নিয়ে খেলা করছেন। বিজ্ঞানের অপপ্রয়োগ করছেন। শিকারকে আস্তে আস্তে অন্ধকার গর্তের দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন। যেখান থেকে সে আর বেরিয়ে আসতে পারে না। আমাদের আকাশ সীমাকে প্রতিরোধ করতে হবে। যাতে করে এই গেম আমাদের দেশে না ঢুকতে পারে। আমাদের নেট গেট বন্ধ করতে হবে রাষ্ট্রীয়ভাবে। কোনো মেধাবী প্রজন্ম এসে যদি বলে এভাবে করা যায়, এভাবে নেট গেটটাকে বন্ধ করা যায়। তাহলে আমরা এর ক্ষতি থেকে রক্ষা পাব। আরেকটা হচ্ছে আমার ঘরে আমার সন্তান কি করছে সেটা দেখা আমার দায়িত্ব। ঘরে বসে সে ডিপ্রেশনে চলে যাচ্ছে কেন তার কারণ খোঁজে বের করতে হবে। ল্যাপটপ চালাতে দেওয়া যাবে না। যে কোণায় বসে কি করছে কেউ দেখছে না। ডেস্কটপও এমন জায়গায় রাখতে হবে, যেখান থেকে সহজেই দেখা যায়। সে যেন গোপনে কিছু ব্যবহার করার সুযোগ না পায়। অত্যাধুনিক এ্যানড্রয়েড সেট যেন তার হাতে না পৌঁছে। অন্তত: প্রাইমারি স্কুলে থাকতেই। এ বিষয়গুলোতে নজরদারি রাখতে হবে। বাচ্চারা অবাধ প্রটেকশনে বড় হচ্ছে।
তাদের ব্যক্তিত্বের মধ্যে ইতিবাচক বোধ তৈরি হচ্ছে না। এমন যেন না হয় যে তারা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে চলে যায়। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে মানিয়ে নিতে তারা পারছে না। একদিন ধ্বংসে নিমজ্জিত হয়। এত আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। আমরা নেট গেটটাকে বন্ধ রাখব। আমরা আমাদের ঘরকে রক্ষা করব। যারা আসক্ত হয়ে গেছে তাদের চিকিৎসার জন্য আসতে হবে। তার ব্রেনের উৎসাহ, উদ্দীপনা, আশা-আকাঙ্খা সমস্ত কব্জা করা হয়ে গেছে। তার আর নিজস্ব কোনো মতামত কাজ করছে না। মাদক খেলে যেমন মজা পায় ,এখন এই গেম তার মধ্যে একধরনের আনন্দ উত্তেজনার আলোড়ন সৃষ্টি করে। মাদক যেমন ছাড়তে পারে না, এই গেমও তেমন ছাড়তে পারে না। এরা মজা পাওয়ার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ কাজগুলো করে। সুতরাং, এদেরকে শনাক্ত করতে হবে। চিকিৎসা করতে হবে। সঠিক চিকিৎসায় সমাধান সম্ভব। আমার মনে হয় না এতে ভয় পাওয়ার কিছু আছে।
পরিচিতি: মনোবিদ
মতামত গ্রহণ: সানিম আহমেদ
সম্পাদনা: আশিক রহমান ও মোহাম্মদ আবদুল অদুদ