লক্ষ্মীপুরে সুপারি চাষে কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে
বাসস : উপকূলীয় জেলা লক্ষীপুর জেলা সুপারির রাজধানী হিসেবে পরিচিত। এ জেলা বর্তমানে প্রায় ৬ হাজার ৩৫৫ হেক্টর জমিতে সুপারি বাগান রয়েছে। চলতি মৌসুমের শুরুতেই সুপারি ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন হাটবাজারে কেনাবেচায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। একদিকে স্থানীয় বাজারে সুপারির চাহিদা ও দাম ভালো থাকায় সুপারি চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। অন্যদিকে চাষাবাদে ঝুঁকি না থাকায় সুপারি চাষ করে বেশ লাভবান হচ্ছেন জেলার বেশির ভাগ কৃষক।
জানা যায়, সুপারি গাছ একবার রোপণ করলে তেমন কোনো পরিচর্যা ছাড়াই টানা ২৫-৩০ বছর ফলন দেয়। আবহাওয়া অনূকুলে থাকায় এবং আধুনিক পদ্ধতি অবলম্বর করায় দিন দিন এ অঞ্চলে সুপারি উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় অন্যান্য ফসলের তুলনায় অধিক লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। সুপারি বাগানে পোকা-মাকড়ের আক্রমণ কিংবা রোগ-বালাই কম থাকায় এ অঞ্চলের কৃষকরা সুপারি চাষের দিকে বেশি ঝুঁকছেন। চলতি মৌসুমের শুরুতেই সুপারি বিক্রির বড় হাট বসেছে লক্ষ্মীপুর শহরের উত্তর তেমুহনী, সদর উপজেলার দালাল বাজার, চররুহিতা, ভবানীগঞ্জ, মান্দারী, চন্দ্রগঞ্জ, জকসিন, রায়পুর উপজেলার হায়দরগঞ্জ বাজার, খাসের হাট, মোল্লারহাট ও রামগঞ্জ, কমলনগর, রামগতিতে। এছাড়াও জেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে সুপারিকে ঘিরে চলছে জমজমাট ব্যবসা। জেলায় উৎপাদিত সুপারির ৭০ ভাগ খালডোবা, পুকুর ও পানিভর্তি পাকা হাউজে ভিজিয়ে রাখেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। আর ৩০ ভাগ সুপারি দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ ছাড়াও রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ করা হয়। উৎপাদিত সুপারি জেলার চাহিদা মিটিয়ে সরবরাহ হচ্ছে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। চলতি মৌসুমের উৎপাদিত সুপারি থেকে প্রায় ৩শ ২৫ কোটি টাকার বেশি আয় হবে বলে জানিয়েছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
লক্ষ্মীপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর লক্ষ্মীপুর জেলায় ৬ হাজার ৩শ’ ৫৫ হেক্টর জমিতে সুপারির আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ১ হাজার ৯শ’ হেক্টর, রায়পুর উপজেলায় ৩ হাজার ১৫০ হেক্টর, রামগঞ্জে ৮শ’ ৯০ হেক্টর, কমলনগরে ৩শ’ ৭৫ ও রামগতি উপজেলায় ৪০ হেক্টর জমিতে সুপারির আবাদ হয়েছে। এখানকার উৎপাদিত সুপারি যাচ্ছে ঢাকা, চট্রগ্রাম, রংপুর, ময়মনসিংহ, রাজশাহী, শ্রীমঙ্গলসহ দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা হচ্ছে। শুরুতে ২ হাজার থেকে ২৫শ’ টাকা প্রতি কাওন (১৬ পোন) সুপারি বিক্রি হলেও মাঝামাঝিতে দাম একটু কমে। আবার শেষ মূহুর্তে দাম বেড়ে যায়।