রোহিঙ্গা সংকট : আশার আলো এখনো দেখছি না
রুহিন হোসেন প্রিন্স
রাখাইনের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উপর জাতিগত নিধন এবং গণহত্যার প্রতিবাদে নিরাপত্তা পরিষদ যৌথভাবে নিন্দা করেছে। নিরাপত্তা পরিষদের রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রতি সহানুভূতি ও নিন্দা জানানোর বিষয়টি অবশ্যই পজিটিভ। কিন্তু আমরা জানি, নিরাপত্তা পরিষদের প্রথম সারির অনেক গুলো রাষ্ট্র আছে, যারা এই সংকটের গভীরে যেতে চায় না। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ রোহিঙ্গাদেরকে জাতিগত নিধন এবং যে গণহত্যা চালিয়েছে তার প্রেক্ষিতে নিরাপত্তা পরিষদের প্রধান দেশগুলো মিয়ানমারের বিরুদ্ধে এখনো কোনো কার্যকর অবস্থান নেয়নি।
সুতরাং ওইসব রাষ্ট্রগুলো রোহিঙ্গাদের প্রকৃত সংকটের ভিত্তিটা যতক্ষণ পর্যন্ত না উপলব্ধি করছে, ততক্ষণ পর্যন্ত শুধু তাদের ঐক্যমত্যের কথার উপর দাঁড়িয়ে কোনো আশার আলো দেখা যায় না। এবং তাদের এ কথার ওপর ভিত্তি করেই রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান জাতিসংঘ বা নিরাপত্তা পরিষদ এখনই করে ফেলবে, সেটা আমি মনে করছি না। তবে যতটুকু তারা এগিয়েছে, এই ধারা অব্যাহত রাখবে সেটা আশা করি। কফি আনান কমিশনের সিদ্ধান্ত পূর্ণ বাস্তবায়নে যদি নিরাপত্তা পরিষদ এবং জাতিসংঘ তাদের নিজেদের উদ্যোগে দায়িত্ব নেয়, তাহলে সেটা আমাদের জন্য সুখবর হবে। সেটা যদি তারা করতে চায় তাহলে দুটি কাজ আগেই করতে হবে। প্রথমত, জাতিগত নিধন বা যে গণহত্যা চলছে সেটা বন্ধ করতে হবে। দ্বিতীয়ত, শুধু গণহত্যা নয় বরং গ্রাম উজাড়ের মধ্য দিয়ে যারা এখনো রাখাইনে আছে, তাদের খাদ্য একেবারই বন্ধ করার মধ্য দিয়ে চলে আসতে বাধ্য করা হচ্ছে। সুতরাং রোহিঙ্গাদের যদি নিরাপত্তা বিধান করতে পারে, তাহলে আমরা কিছুটা আশার আলো দেখতে পারি। তবে আমরা সে আশার আলো এখনও দেখছি না।
অন্যদিকে রোহিঙ্গারা তাদের বসত ভিটায় উঠবে এবং সেখানে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এমনকি সারা মিয়ানমারে তাদের চলাচলের অধিকার থাকবে। তাদের নাগরিকতের¡ স্বীকৃতি দিতে হবে। এটা করলেই আমরা বুঝবো যে, মিয়ানমার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সঙ্গে মানবিক আচরণ করছে।
পরিচিতি: সম্পাদক, সিপিবি
মতামত গ্রহণ: বায়েজিদ হোসাইন
সম্পাদনা: মোহাম্মদ আবদুল অদুদ