সাক্ষাৎকার শামসুজ্জামান দুদু সুষ্ঠু নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা হিসেবে যুক্ত হয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনারও
খন্দকার আলমগীর হোসাইন : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমরা অংশগ্রহণ করতে চাই। সেটা অনেকবারই বলেছি। নির্বাচনি প্রস্তুতিও আমাদের রয়েছে। আমরা নির্বাচনে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত। কিন্তু বর্তমানে যে পরিবেশ-পরিস্থিতি এবং অতীত অভিজ্ঞতা তাতে আমরা ভরসা পাই না। সুষ্ঠু নির্বাচনি পরিবেশ নিশ্চিত হলে বিএনপি অবশ্যই নির্বাচনে যাবেÑ আমাদের অর্থনীতিকে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। তিনি বলেন, ২০১৪ সালেও নির্বাচনে যাওয়ার জন্য আমরা আন্দোলন করেছি। নির্বাচনে যেতে চেয়েছিলাম, সব প্রস্তুতিও আমাদের ছিল। কিন্তু নির্বাচনে অংশগ্রহণের সেই পরিবেশ কী ছিল? বিএনপি নির্বাচনে অংশগহণ না করলেও একপ্রকার জোর করে ১৫৪ জন সংসদ সদস্য বিনা ভোটে নির্বাচিত ঘোষণা করে তারা সরকার গঠন করেছেন, যা সংবিধান পরিপন্থী। সংবিধানের দোহাই দিয়ে তারা এ পর্যন্ত চলছেন। তিনি বলেন, সংবিধানে সুস্পষ্টভাবে বলা আছে, জণগণের ‘প্রত্যক্ষ ভোটে’ সংসদ সদস্যদের নির্বাচিত হতে হবে। যারা ২০১৪ সালের নির্বাচন করেছেন তাদের অধীনে যে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়, তা প্রমাণিত হয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমরা এখনো আন্দোলন করছি। আমরা যেকোনো সময় নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি আমাদের রয়েছে। কিন্তু শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে যাওয়া হবে না, আমরা যাবও না।
তিনি আরও বলেন, আমরা চাচ্ছি একটি উৎসবমুখর, সবার অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। দলীয় সরকারের অধীনে সুস্থ নির্বাচন সম্ভব নয়। নির্বাচন হতে হবে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য। জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবেও গ্রহণযোগ্য হতে হবে। তাই আমরা সহায়ক সরকারের কথা বলছি। সহায়ক সরকারের অধীনেই একটা নির্বাচন হোক। দলের স্থায়ী কমিটি সদস্যরা সহায়ক সরকারের রূপরেখা নিয়ে কাজ করছেন।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, নির্বাচনের জন্যই আমাদের সব কর্মকা-। সে প্রেক্ষিতে আমরা সারা দেশে কাজ করেছি। প্রতিটি আসনে একাধিক প্রার্থী রয়েছেন। আমাদের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, প্রার্থী সংকট তো দূরে থাক, কমপক্ষে ৯শ প্রার্থী আমাদের প্রস্তুত রয়েছেন; নির্বাচন করার জন্য। যেখানে প্রার্থী লাগবে ৩শ।
তিনি বলেন, আমাদের ভরসা হচ্ছে জনগণ। তারা আমাদের সঙ্গে আছেন। যতগুলো স্থানীয় সরকার নির্বাচন হয়েছে, যেখানে মানুষ ভোট দেওয়ার সুযোগ পেয়েছে, সেখানেই বিএনপি তথা ২০ দলের প্রার্থীদের বিপুল বিজয় হয়েছে। জনগণের ভোটে বিএনপি যে কবার বিজয় লাভ করেছে, বিপুল জনপ্রিয়তা নিয়ে সরকার গঠন করেছে।
তিনি আরও বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের ক্ষেত্রে এখন মূল প্রতিবন্ধকতা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী। তিনি একটি দলের প্রধানই শুধু নন, তার অধীনে নির্বাচন হলে সেই নির্বাচনে আমাদের অংশগ্রহণের সম্ভাবনা একেবারেই নেই। কারণ কারচুপির নির্বাচন করার জন্য তার মনোনীত প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সব প্রতিষ্ঠানকে তিনি করায়ত্ব করে রেখেছেন।
তিনি আরও বলেন, আপনারা খেয়াল করেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা হিসেবে যুক্ত হয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনারও। উনি বলে দিলেন, বিএনপি নির্বাচনে আসবে। কীভাবে তিনি এ কথা বলতে পারেন? তিনি তো সরাসরি আওয়ামী লীগের লোক। তার অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে এটা এখনো প্রমাণ করতে পারেননি। তিনি বলেছেন, তিন মাস আগে তিনি অ্যাকশনে যাবেন। এটা একটি সাংবিধানিক পদ, তিনি আন্তরিক হলে সারাবছরই কাজ করতেন, এ কথা বলতে পারতেন না।
সম্পাদনা : আশিক রহমান