নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় কষ্ট বেড়েছে শ্রমজীবী মানুষের
জাফর আহমদ : নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির ফলে কষ্ট বেড়েছে নির্দিষ্ট আয়ের শ্রমজীবী মানুষের। গত ৭ মাসে পণ্য বিশেষে ১০ থেকে ১০০ ভাগ দাম বেড়েছে নিত্যপণ্যের। এতে খরচ বেড়েছে শ্রমিকদের। নির্দিষ্ট ও কম আয়ের শ্রমিকদের বাড়তি খরচ সামাল দিতে কম খাওয়া বা ধার-দেনার আশ্রয় নিতে হচ্ছে। বিশেষ করে ও কম আয়ের গার্মেন্ট শ্রমিকদের বিপদে পড়তে হয়েছে। এ অবস্থায় কল-কারখানায় উৎপাদন অব্যাহত রাখতে মহার্ঘ ভাতা ও রেশন দেওয়ার দাবি জানিয়েছে শ্রমিকরা। পাশাপাশি মজুরি বৃদ্ধির জন্য ন্যূনতম মজুরি বোর্ড গঠনের দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফেডারেশনের সভাপতি মোশরেফা মিশু বলেছেন, সব ধরনের পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে মধ্যবিত্ত মানুষের জীবনই দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে। শ্রমিকরা যে বেতন পায় এর শতকরা ৭০ ভাগ চলে যায় বাড়িভাড়া দিতে। বাকি টাকা দিয়ে চলতে হচ্ছে। গত ছয় মাসের ব্যবধানে ৩০ থেকে ৩৫ টাকার মোটা চাল উঠেছে ৫৫ থেকে ৬৩ টাকায়। ৩৮ থেকে ৪২ টাকার চিকন চাল উঠেছে ৬৫ থেকে ৬৮ টাকায়। সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে ১৫ থেকে ২৫ টাকা পর্যন্ত। প্রতি কেজি লবণে বেড়েছে ১০ টাকা থেকে ১৫ টাকা। প্রতি কেজি পেঁয়াজে বেড়েছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা। মরিচের দাম বেড়েছে প্রায় ৭ গুণ। মাংস কেজিতে বেড়েছে ১৫০ টাকা। বেড়েছে সব ধরনের মাছ ও অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম। ফলে ৬ থেকে ৭ মাস আগে একজন শ্রমজীবী মানুষ নিত্যপণ্য কিনতে যে অর্থ ব্যয় করতেন এখন তা বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। কিন্তু আয় বাড়েনি। বিশেষ করে গার্মেন্টস শ্রমিকসহ বিভিন্ন বেসরকারি খাতের শ্রমিকদের পড়তে হয়েছে বেকায়দায়। ২০১৩ সালের মজুরি বৃদ্ধির পর আর মজুরি বাড়েনি। কিন্তু কারখানা শ্রমিকদের বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট হিসেবে কিছু বেতন বাড়ালেও তা সামান্য। এবং সেটাও ১০ মাস আগে।
মিরপুরের ভিশন গার্মেন্ট কারখানার শ্রমিক আমেনা খাতুন বলেন, গত বছর ডিসেম্বর মাসে চাল, ডাল, আটা, সবজি কিনতে খরচ করতে হতো ৫ হাজার থেকে সাড়ে ৫ হাজার টাকা। সেই একই পরিমাণ খাদ্য কিনতে খরচ লাগে ৮ হাজার থেকে সাড়ে ৮ হাজার টাকা। আগেই সংসার চলাতে কষ্ট হতো। এখন সেই কষ্ট আরো বেড়েছে।
এ ব্যাপারে গার্মেন্ট টিইউসির গাজীপুর জেলা সভাপতি জিয়াউল কবীর খোকন বলেন, বাজারমূল্য সামাল দিতে এখনই মজুরি বোর্ড গঠন করে মজুরি বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। মজুরি বোর্ডে বাড়তি মজুরি নির্ধারণের আগে জরুরি ভিত্তিতে মহার্ঘভাতা দিতে হবে। তা না হলে উৎপাদনে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। সম্পাদনা : হাসিবুল ফারুক চৌধুরী