প্রধান বিচারপতির বক্তব্যে সরকারসহ সংশ্লিষ্টমহলের ধৈর্যচ্যুতি হয়েছে
জান্নাতুল ফেরদৌস পান্না : প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা দেশত্যাগ করার পূর্ব মুহুর্তে গণমাধ্যমে যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে সরকারসহ সংশ্লিষ্ট মহলের ধৈর্যচ্যুতি ঘটিয়েছেন। যার ফলে চেপে যাওয়া প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে ১১ দুর্নীতির কথা বাধ্য হয়েই প্রকাশ্যে এসেছে।
জানা যায়, সরকারের কৌশল ছিলো প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আছে তা তিনি জানার পর সতর্ক ও সংযত আচরণ করবেন। এটা সরকারের ধারণা ছিলো। কিন্তু তিনি তা করেন নি। প্রধান বিচারপতি দেশের বাইরে যাওয়ার পূর্বে স্ববিরোধী বক্তব্য দিয়ে নিজেই নিজের ক্ষতি করলেন বলে সরকারের উর্দ্ধতন মহল মনে করছেন।
প্রধান বিচারপতি ‘রাষ্ট্রপতিকে লেখা ছুটির আবেদনে অসুস্থতার কথা লিখেছিলেন। এবং সেই ছুটির আবেদন নিয়ম মোতাবেক জিও হয়। এরই প্রেক্ষিতে গত শুক্রবার রাতে অস্ট্রেলিয়ার পথে রওনা হওয়ার আগে প্রধান বিচারপতি এক লিখিত বিবৃতিতে নিজেকে ‘সম্পূর্ণ সুস্থ’ বলেন। প্রধান বিচারপতির এমন বক্তব্যেও জবাবে গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে আইনমন্ত্রী বলেন, ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় নিয়ে ক্ষমতাসীনদের সমালোচনায় তিনি ‘বিব্রত’। বিচার বিভাগ যাতে ‘কলুষিত না হয়’, সেজন্য তিনি নিজেই ‘সাময়িকভাবে’ যাচ্ছেন এবং আবার ফিরে আসবেন। প্রধান বিচারপতির এমব বক্তব্যে আমি হতভম্ব। তবে প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে যে ১১টি অভিযোগ এসেছে সুপ্রিমকোর্ট থেকে। এসব অভিযোগের তদন্ত করবেন দুদক।
জানা যায়, দুদকের তদন্তাধীন সময়ের মধ্যে প্রধান বিচারপতি যদি আর কোন বাড়াবাড়ি না করেন তবে সরকার তাকে যথাযথ প্রক্রিয়ায় অবসরে যেতেও বাধা দিতে চায় না। একটি নির্ভরশীল সূত্র আরো জানিয়েছে, সরকার চাচ্ছিলো না, প্রধান বিচারপতি বিতর্কিত হন। প্রধান বিচারপতি যদি আর কোন পদক্ষেপ না নেন তবে সরকারও সিরিয়াসলি আর কোন ভ’মিকা রাখতে চায় না। আর এ বিষয়টি গতকাল আইনমন্ত্রীর বক্তব্যে কিছুটা ইঙ্গিত বহন করে।
গতকাল আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, আইন অনুযায়ী বিচারপতি এস কে সিনহা এখনও বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি। একজন প্রধান বিচারপতি পদটি একটি প্রতিষ্ঠান ও সাংবিধানিক পদ। ফলে তার বিরুদ্ধে তাড়াহুড়ো বা খামখেয়ালি করে কিছু করা সমীচীন নয়।
আরেকটি মহল থেকে স্পষ্টত জানা যায়, প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা বিচারালয়ে আর ফেরার কোন সুযোগ নেই। তবে, ১১ অভিযোগ তদন্তের অগ্রগতি ও সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপ কি হবে তা নির্ভর করবে প্রধান বিচারপতির আচরণের উপর। ইতিমধ্যেই প্রধান বিচারপতি অনেক বেশী সন্দেহ, দু:খজনক ও বিতর্কে জড়িয়ে গেছেন। এক্ষেত্রে প্রধান বিচারপতি যদি আরো কোন বিবৃতি দেয় তবে, সরকারও আরো কঠোর হবে বলে একটি সূত্র জানিয়েছেন। সম্পাদনা:হুমায়ুন কবির খোকন