শেখ হাসিনা সত্যিই মাদার অব হিউম্যানিটি
এএইচএম মাসুদ দুলাল : গণতন্ত্রের মানস-কণ্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার কার্যক্রমের মাধ্যমে প্রমাণ করেছেন, তিনি সত্যিই মাদার অব হিউম্যানিটি। মমতাময়ী জননীর ন্যায় তিনি ছুটে গিয়েছেন দেশহারা, স্বজনহারা, অসহায় রোহিঙ্গাদের কাছে। সেখানকার শিশুদের তিনি বুকে তুলে নিয়েছেন। বৃদ্ধদের দিয়েছেন ভরসা। মায়ের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখেছেন এই লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গাকে, যা বিশ্ববাসীর নজর কেড়েছে। কারণ, ১৯৭১ সালে শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী কর্তৃক আমাদেরকে আশ্রয় দেওয়ার কথা আর ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর তার নিজের মানসিক অবস্থার কথা তার স্মরণে রয়েছে। রোহিঙ্গাদের পাশে ছুটে যাওয়াতে আন্তর্জাতিক ফোরামগুলোতে তিনি ব্যাপকভাবে প্রশংসিতও হয়েছেন। একইসঙ্গে এত বেশি সংখ্যক মানুষের দায়িত্ব নেওয়া যে কত বড় মহানুভবতার উদাহরণ, তা বলে বুঝাতে হয় না। জাতিসংঘে প্রদত্ত তার ৫ দফা প্রস্তাব রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক। তার এই সাড়া জাগানো ভূমিকা ও তারই আন্তরিক প্রচেষ্টায় মিয়ানমারের উপর তৈরি হয় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপ। ফলে অং সান সুচি দ্বি-পাক্ষিক আলোচনার প্রস্তাব নিয়ে তার দপ্তর মন্ত্রীকে ঢাকায় পাঠাতে বাধ্য হন । রোহিঙ্গাদেরকে তাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর জন্য একটি কার্যকর ব্যবস্থা হিসেবে আমরা পাই ‘জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ’।
এ বছরের ২৫ আগস্ট থেকে মিয়ানমার আর্মি রোহিঙ্গাদের ওপর যে অত্যাচার, নিপীড়ন ও হত্যাকা- সংগঠিত করেছে এটিকে বিশ্ববাসী এথনিক ক্লিনজিং বা জাতিগত নিধন আবার কেউ গণহত্যা বলে অভিহিত করেছে। রোহিঙ্গাদের ওপর অত্যাচার, নিপীড়ন ও হত্যাকা- বিষয়ে মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে যেসব রাষ্ট্র এগিয়ে এসেছে সেগুলোর মধ্যে তুরস্ক, ইরান, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, কাতার ও ইন্দোনেশিয়া উল্লেখযোগ্য। সার্কভুক্ত মুসলিম অধ্যুষিত ভারত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপ রোহিঙ্গা নিধন ও তাদের প্রতি অত্যাচার ও নিপীড়নের প্রতিবাদে ইতোমধ্যে মিয়ানমারের সঙ্গে সকল ধরণের বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। চেসনিয়ায় মিয়ানমারের নৃশংসতার বিরুদ্ধে সম্প্রতি যে বিক্ষোভ হয়, তাতে পাঁচ লক্ষাধিক লোক সমবেত হয়েছিল। পৃথিবীর অন্যান্য মুসলিম রাষ্ট্রেও ছোট-বড় বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ উন্নত বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানবতাবাদী মানুষের হৃদয়ে দেশহারা রোহিঙ্গাদের প্রতি ব্যাপক সমবেদনা তৈরি হয়। আর সবই হয়েছে দেশরতœ মমতাময়ী জননী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে পরিচালিত কূটনৈতিক তৎপরতার জন্য। আর রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রতি তার অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি অর্জন করেন মাদার অব হিউম্যানিটি উপাধি। তার যে মানসিক দৃঢ়তা তা নিঃসন্দেহে দেশবাসীকে আশ্বস্ত করছে। তিনি আজ আমাদের জন্য উদাহরণ। আর সত্যিই তিনি মাদার অব হিউম্যানিটি।
লেখক : সাবেক সহ-সম্পাদক, কেন্দ্রীয় উপ-কমিটি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
সম্পাদনা: মোহাম্মদ আবদুল অদুদ