ইসিতে বিএনপির ২০ দফা অত্যন্ত যুক্তিসংগত
অধ্যাপক মো. ইউনুস
বিএনপি নির্বাচন কমিশনের সাথে সংলাপে যে ২০ দফা দাবি উত্থাপন করেছে, সেগুলো নিঃসন্দেহে অত্যন্ত ন্যায় সংগত ও যুক্তিসংগত। বর্তমান প্রেক্ষাপটে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন করার লক্ষ্যে বিএনপির পক্ষ থেকে প্রদত্ত প্রত্যেকটি দাবিই যুক্তিসংগত। মানুষের কল্যাণে, নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে ইসির এসব দাবি বিবেচনা করা উচিত বলে আমি মনে করি। এসব দাবি বাস্তবায়ন হলেই অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হবে। একদলীয় ব্যক্তির অধীনে বা ভোটারবিহীন নির্বাচনে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে সুষ্ঠু নির্বাচন আশা করা যায় না। তখন একতরফা নির্বাচন হবে। বর্তমান সংসদ নেত্রীর অধীনে যদি নির্বাচন হয়, তা কোনোক্রমেই এদেশের জনগণ মেনে নেবে না। দেশের শতকরা ৭০-৮০ ভাগ লোকই নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করার পক্ষে। তাই বিএনপির ২০ দফা অত্যন্ত যৌক্তিক ও ন্যায়সংগত। নির্বাচন কমিশনের অবশ্যই এই দাবিগুলো বিবেচনায় নেওয়া উচিত।
ভোটারবিহীন নির্বাচনে তারা পাস করেছে। নির্বাচনে সরাসরি প্রভাব ফেলতে তাদের অসুবিধার কিছু নেই। সংসদকে পাশ কাটিয়ে তারা যা ইচ্ছা তাই করতে পারেন। একক সিদ্ধান্তে সংসদে আইন পাস করতে পারেন। যেহেতু এই সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে কিছুই বলা যায় না, সংসদ যদি থাকে, তাহলে প্রত্যেকটা প্রার্থীই সেখানে কারচুপি করা বা জোর করে ফলাফল জালিয়াতি করার মত ক্ষমতা রাখবে। এজন্যই সংসদ ভেঙে দেওয়া উচিত। এই সংসদ রাখলে মোটেই ভালো নির্বাচন আশা করা যায় না। এটা এদেশের মানুষ ভালো করে বুঝতে পারছে। সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচনের জন্যই সংসদ ভেঙে দেওয়া অত্যন্ত জরুরি বলে আমি মনে করি। আর নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার তখন অনিবার্য বিকল্প বলে আমি মনে করি। খালেদা জিয়াসহ অনেক নেতাকর্মীর নামে মামলা আছে, গ্রেফতারি পরোয়ানার হুমকি আছে। তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলো মিথ্যা ও রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রমূলক। এমন অনেক মিথ্যা মামলা দায়ের করে আমাদের দলের মহাসচিবসহ অসংখ্য নেতা-কর্মীকে হয়রানি করছে সরকার। কে গাড়ি পুড়িয়েছে সেটা বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে জানার কথা নয়। তার পক্ষে বলাও সম্ভব নয় যে, গাড়ি পোড়াও। বর্তমানে যারা ক্ষমতাসীন দল, তারাই জোর করে প্রশাসনকে বাধ্য করছে এসব মামলা দিতে। এজন্যই প্রত্যেকটা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।
এদেশের সেনাবাহিনী অত্যন্ত নিরপেক্ষ। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে বাংলাদেশ সেনা বাহিনী। যে কোনো জরুরি প্রয়োজনে তারা তাদের নিরপেক্ষ ভূমিকাটা জাতির খেদমতে উপস্থাপন করছে। সেনাবাহিনীর হাতে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিলে অত্যন্ত সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন আশা করা যায়। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসার পরেই বহুদলীয় গণতন্ত্র পিরে আসে। এব্যাপারে প্রধান নির্বাচন কমিশনার যা বলেছেন তা যথার্থ এবং নিরেট সত্য কথা।
পরিচিতি : সাবেক সংসদ সদস্য, কুমিল্লা-৫
মতামতগ্রহণ : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ
সম্পাদনা : আশিক রহমান