মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ভবনস্থলে ২০তলা ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা
হুমায়ুন কবির খোকন ও আনিসুর রহমান তপন : সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ভবনটি (ইডেন ভবন) পুরনো ও ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সেখানে ২০তলা নতুন ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা করছে গণপূর্ত অধিদফতর। সূত্র জানায়, বহুতল ভবন নির্মাণের একাধিক নকশা প্রণয়ন করা হচ্ছে। এসব নকশা প্রেজেনটেশনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর সামনে তুলে ধরা হবে। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর সেই অনুযায়ী ভবন নির্মাণ করা হবে। এতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ১নং ভবনসহ আশপাশের জায়গা নিয়ে তৈরি করা হবে। গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন আমাদের অর্থনীতিকে জানান,এটি মাল্টিস্টোরিড বিল্ডিং হবে। পুরনো ইডেন ভবনের আদলে দৃষ্টিনন্দনভাবে তৈরি করা হবে। বাইরে থেকে দেখলে যাতে পুরনো ইডেন বিল্ডিং এর অবয়বের মতোই লাগে। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরামর্শ অনুযায়ী এ ভবনের নকশার চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সচিবালয়ের এই এক নম্বর ভবনেই অফিস করতেন। এখনো তার অফিস কক্ষটি সেখানে রয়েছে। তবে সেটি কেউ ব্যবহার করেন না।
গণপূর্ত অধিদফতরের সূত্র অনুযায়ী, ইডেন ভবনটি ১৯৩৭ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়, এটি তখন একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল ছিল। পরে শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের উদ্যোগে সেখানে ইডেন কলেজ স্থানান্তরিত হয়। পরে কলেজটি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়। ভবনটি পরবর্তীকালে ইডেন বিল্ডিং নামে পরিচিত হয়। ১৯৪৭ সালে সরকার ইডেন বিল্ডিং-এ নতুন প্রাদেশিক সচিবালয় প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেয়। গণপূর্ত অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম জানান, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সচিবের নেতৃত্বে আজ মঙ্গলবার সভায় এসব বিষয়ে পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হবে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) এমএন জিয়াউল ইসলাম বলেন,এটির অবকাঠামোগত উপযোগিতা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। এ ভবনে দাফতরিক কাজ কতদিন চালানো সম্ভব হবে।
এদিকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমের সভাপতিত্বে এ সংক্রান্ত বিষয়ে সভা হবে। সভায় এ ভবন নির্মাণকালে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ অন্যত্র স্থানান্তরসহ আনুষঙ্গিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে।
সর্বশেষ গত ২২ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে মন্ত্রিসভা বৈঠক হয়। বৈঠকে ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় আগামী অন্তত এক বছর সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে মন্ত্রিসভা বৈঠক হবে না এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এ বৈঠক হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এখন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সাপ্তাহিক মন্ত্রিসভা বৈঠক হচ্ছে।
সূত্রমতে,মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষ ও প্রধানমন্ত্রীর দফতর সচিবালয়ের ১ নম্বর ভবনের চার তলায় অবস্থিত। এর উপরে আর কোনো ফ্লোর নেই। এজন্য কয়েকটি রুমে ছাদ চুইয়ে বিভিন্ন রুমে পানি পড়ে। এছাড়া মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কোনো কোনো রুম বেশির ভাগ সময় স্যাঁতস্যাঁতে থাকে। উৎকট গন্ধ বের হয়। এ কারণে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কয়েকটি রুমে অফিস করাও কষ্টকর।