কয়েনের কার্যকারীতা ফুড়িয়ে যাচ্ছে
আনোয়ার হোসেন: পয়সার যুগ অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। ১০, ২৫ ও ৫০ পয়সা এখন মূল্যহীন। তবে এখন বাকী কয়েনগুলোর কার্যকারীতাও ফুড়িয়ে যাচ্ছে। এখন শুধুমাত্র ৫ টাকার কয়েন বাজারে কিছুটা চলমান। আর বাকী ১ ও ২ টাকার কয়েন কেউ নিতে চায় না। বর্তমানে এসব ধাতব মুদ্রার লেনদেন নিয়ে বেশ অস্বস্তিকর অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। ক্রেতা, বিক্রেতা, চালক এমনকি ব্যাংক পর্যন্ত নিতে চায় না এসব কয়েন। এতে ব্যবসায়ীরা পড়ছেন লোকসানে। সাধারণত দোকানীরা ১ বা ২ টাকার বদলে ধরিয়ে দিচ্ছেন চকলেন। আর মূল্যস্ফীতির কারণে বিষয়টিকে স্বাভাবিক ভাবেই নিচ্ছেন ক্রেতারা। কার্যকারিতা কমে যাওয়ায় পয়সার স্তুপ জমা হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে । যা নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে খোদ বাংলাদেশ ব্যাংক। বর্তমানে বাজারে ইস্যুকৃত ১ টাকার ১৮৭ কোটি পিস, ২ টাকার ৭৮ কোটি ও ৫ টাকার ৪১ কোটি ৪০ লাখ পিস কয়েন রয়েছে। যা মোট ৫৫০ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ১ পয়সা মূল্যমানের ৩০ লাখ পিস, ১০ পয়সার মূল্যমানের ৪০ লাখ পিস, ২৫ পয়সার মূল্যমানের ৫৪ লাখ পিস, ৫০ পয়সা মূল্যমানের ১০ হাজার পিস মুদ্রা আগে থেকেই জমা রয়েছে। যার অর্থমূল্য ১৫ লাখ ৮০ হাজার টাকা। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের বাজারে কোনো ধাতব মুদ্রাই প্রচলন অযোগ্য ঘোষণা করেনি। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহা বলেন, পৃথিবীর সব দেশেই ধাতব মুদ্রার প্রচলন রয়েছে। ইউরোপ, আমেরিকার বাজারে এখনো মানুষ পকেট ভরে কয়েন নিয়ে বাজারে যায়। আমাদের দেশের প্রবাসীরাও সে দেশে কয়েন দিয়েই কেনাকাটা করে। অথচ দেশের বাজারে আমরা কয়েন নিতে চাই না। বাংলাদেশ ব্যাংক কয়েক দফায় নির্দেশনা দিয়ে ব্যাংকগুলোকে বলেছে, বাজারে প্রচলিত কোনো মুদ্রা নিতে অস্বীকৃতি জানানো এক ধরনের অপরাধ। তাই কয়েন ব্যবহারে সাধারণ মানুষকে আরো সচেতন হতে হবে।
উল্লেখ্য, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ১ ডলারের মূল্যমান ৮ টাকার কম ছিলো। অথচ বর্তমানে তা ৮০ টাকা ছাড়িয়ে গেছে। ৪৫ বছরে আমাদের টাকার মান কমেছে ১০ গুণ। মূল্যস্ফীতির এই পরিবর্তনেই ধীরে ধীরে কার্যকারীতা ফুড়িয়ে যাচ্ছে পয়সার। সম্পাদনা: তরিকুল ইসলাম সুমন