সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো খুবই দুর্বল বলেই শান্তি কমিটির সদস্য প্রধান বিচারপতি : অধ্যাপক আফসান চৌধুরী
আরিফুর রহমান তুহিন : দেশের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো দুর্বল বলেই একজন শান্তি কমিটির সদস্য প্রধান বিচারপতি হতে পেরেছেন বলে মনে করেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আফসান চৌধুরী। অন্যদিকে বিএনপির আলোচকের দাবি সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার কারণেই প্রধান বিচারপতির দোষগুলো সামনে এনেছে সরকার। আওয়ামী লীগের দাবি, প্রধান বিচারপতির কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় তাকে নিয়ে তদন্ত ও অভিযোগ সামনে এসেছে। ১৫ অক্টোবর বেসরকারি টিভি চ্যালেন সময় টিভির নিয়মিত আয়োজন সম্পাদকীয় অনুষ্ঠানে ‘বিচারপতি তোমার বিচার…’ শিরোনামের অনুষ্ঠানে তারা এসব কথা বলেন। বিএনপির সহ-আন্তার্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, বিচার বিভাগ দেশের প্রধান তিন কাঠামোর একটি। অথচ ১৬ সংশোধনীর রায় প্রকাশের পর যেভাবে রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তাপ দেখলাম, বিশেষ করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এই রায়কে কেন্দ্র করে যেভাবে মতামত দিয়েছে এটা কন্টেম্পট অব কোড বহির্ভূত। তারা বলছে, এই রায় অন্য একজন লিখে দিয়েছে, বিচারপতিকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ, তার ধর্মীয় বিশ্বাস নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
রুমিন বলেন, তাকে বলা হয়েছিল আপনি ছুটিতে চলে যান, না হয় পদত্যাগ করেন অথবা আপনি দেশ থেকে চলে যান। এখন তিনটিই বাস্তবায়িত হল। প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে অভিযোগের ব্যাপারে তিনি বলেন, তিনি তো আজকের বিচারপতি নন। তিনি হাইকোর্টের বিচারপতি ছিলেন, তার হাত ধরে যুদ্ধাপরাধীর রায় এসেছে, ১৩তম সংশোধনীর রায় এসেছে। যখন তিনি ১৬ সংশোধনীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে সরকারের সমালোচনা করলেন তখন তার ব্যাপরে অভিযোগ আনা হল।
যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক অপু উকিল বলেন, প্রধান বিচারপতি দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম থেকেই যে পদক্ষেপগুলো নিয়েছেন জনমনে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, যেখানে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছিল সেই বিচারকে বাধাগ্রস্ত করতে পুরাতন হাইকোর্ট ভবন থেকে এই আদালতকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য একাধিকবার আইন মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছেন। বিচারপতিদের ছুটির মেয়াদ কমানোর চেষ্টা করেছেন। বিচারক নিয়োগের সময় তার পছন্দের ব্যক্তিরা নিয়োগ পায়নি বলে সেটাকেও বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করেছেন। তার বক্তব্যগুলোও চিফ জাস্টিজের বক্তব্যের সঙ্গে যায় না। সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পরিবারের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। তিনি ১৬ সংশোধনীতে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ এবং সংসদ সদস্যদের নিয়ে কথা বলায় তাকে নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আফসান চৌধুরী বলেন, সিনহা দোষ করেছে না কি করেছে এটা বড় কথা না। আমার কাছে মনে হয়েছে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো খুব দুর্বল। আমরা যখন একজন পিয়নকেও সরকারি প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ করি তখন তার পুলিশ ভেরিফিকেশন করি। অথচ কীভাবে একজন শান্তি কমিটির সদস্যকে বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ করা হল? সর্বশেষ তাকে প্রধান বিচারপতি বানানো হল। তার ব্যাপারে ১১টি অভিযোগ আনা হয়েছে কিন্তু এখনো প্রমাণিত না। সংকট হল, যে প্রতিষ্ঠানে তিনি কাজ করেছেন সেই প্রতিষ্ঠানে আরও কেউ তার মতো আছে কি নাÑ কী করে বুঝব। এগুলো মানুষের মনে প্রশ্ন জেগেছে। সম্পাদনা : হাসিবুল ফারুক চৌধুরী