একান্ত সাক্ষাৎকার নজরুল ইসলাম খান কমিশনের সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসু হলেও ফল কী দাঁড়াবে তা নিয়ে আমরা চিন্তিত
খন্দকার আলমগীর হোসাইন : বিএনপি নির্বাচনমুখী দল। নির্বাচন করেই ক্ষমতা যেতে চায়। নিয়মতান্ত্রিকভাবেই আমরা ক্ষমতার পরিবর্তন চাই। আর সেটা করতে পারে নির্বাচন কমিশন। একটি সহায়ক সরকার। নির্বাচন কমিশনের দিকে দেশের মানুষ তাকিয়ে আছে। এ কমিশন নিয়ে নানা বির্তক থাকার পরও আমরা তাদের ডাকে সাড়া দিয়েছি। সংলাপে অংশগ্রহণ করেছি। সুষ্ঠু নির্বাচনে আমরা তাদের সহযোগিতা করতে চাইÑ আমাদের অর্থনীতিকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটিরি সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন কারা থাকবে, কেমন লোক থাকবে, সে বিষয়ে আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া প্রেস কনফারেন্স করে বলেছিলেন; কোন ক্যাটাগরির লোক থাকবে কমিশনে। দুর্ভাগ্য হলো, সার্চ কমিটি যেটা হলো সেটা নিয়েও আমাদের প্রশ্ন ছিল, আমরা তখনও বলেছি, আমাদের কথা মানা হয়নি। যে সার্চ কমিটি গঠন নিয়ে এত আলোচনা থাকার পরও আমরা কমিশন গঠনের সার্চ কমিটির ডাকে সাড়া দিয়েছিলাম। কিন্তু কমিশনে যাদের নিয়োগ করা হয়েছে, তাদের অনেকের সম্পর্কে আমাদের কথা ছিল, তাও মানা হয়নি। বরং বলা যায়, সম্পূর্ণ একতরফাভাবে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়।
তিনি আরও বলেন, আমরা যখন কথা বলি, সেটার জবাব না দিয়ে অন্যভাবে সরকারি দল কথা বলে। যেটা শোভন নয়। তারা শোনে খুব মনোযোগ দিয়ে, মানার সময় তা দেখা যায় না। বেগম খালেদা জিয়া যে প্রস্তাব দিয়েছিলেন, রাজনীতির সাথে সংশ্লিষ্ট কাউকে যেন নিয়োগ দেওয়া না হয় সার্চ কমিটিতে। সচিব পর্যায়ে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন, সিনিয়র পর্যায়ের কাউকে যেন নেওয়া হয়। অবসর নেওয়ার পর বিশেষ কোনো দায়িত্ব পালন না করেন এমন একজন। যিনি সুবিধাভোগী সে রকম যেন না হয়। কিন্তু আমরা দেখলাম যাকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার করা হলো, তিনি ছাত্রলীগের ফজলুল হক হল ক্রীড়া সম্পাদক ছিলেন। তিনি সচিব হিসেবে বস্তুত কখনই কাজ করেননি। তিনি যুগ্ম সচিব হিসেবে অবসব নিয়েছেন। অবসরে গিয়ে মামলা করে আওয়ামী লীগ আমলে তাকে সচিব করা হয়। অর্থাৎ সচিব হিসেবে তিনি কখনো কাজ করেননি।
অর্থাৎ আমরা যেমন লোক নিয়োগ করতে বলেছিলাম, সরকার তা করেনি। একইভাবে আমরা আরও দু-একজনের সম্পর্কে বলেছিলাম; সেসবেরও তোয়াক্কা করা হয়নি। এরপরও আমরা নির্বাচন কমিশনের সাথে বিভিন্ন বিষয়ে দেখা করেছি, নানা সময়ে।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপ বা আলোচনা ভালই হয়েছে। কমিশনের সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসু হলেও ফল কী দাঁড়াবে তা নিয়ে আমরা চিন্তিত। কমিশন থেকে একটা কথা বারবার বলা হয়েছে, আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করার জন্য। এবং সেটার জন্য যেকোনো ধরনের ঝুঁকি আমরা নেবো। এক্ষেত্রে আপনাদের সহযোগিতা কামনা করছি। এ কথাগুলো বারবার বলেছেনে। এবং আমরা যে প্রস্তাবগুলো দিয়েছি, কোনো প্রস্তাবেই দ্বিমত করেননি। বলেননি, এটা যুক্তিযুক্ত নয়। দু-একটার ব্যাপারে বলেছেন, তাদের ক্ষমতার মধ্যে পড়ে না। তারা বলেছেন, যেহেতু বিএনপি একটি বড় দল, তারা বারবার ক্ষমতায় এসেছে, বিএনপিকে গুরুত্ব দেওয়া হবে। আসলেই কতটা গুরুত্ব দিবে সামনের দিনগুলোতেই তা দেখা যাবে।
সম্পাদনা: আশিক রহমান