সাত কারণে ব্যাহত হচ্ছে বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপাক্ষিক বানিজ্য
তানভীর আহমেদ: বাংলাদেশ-ভারতের ৮০ শতাংশ স্থল বাণিজ্য বেনাপোল-পেট্রাপোল স্থলবন্দরের মাধ্যমে হচ্ছে। যা বাণিজ্যিক অনুপাতে এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ স্থলবন্দর হিসেবে বিবেচিত হলেও এই বানিজ্য ব্যাহত হচ্ছে সাত কারণে।
গতকাল গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম)’র নিজস্ব কার্যালয়ে বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপাক্ষিক বানিজ্য বৃদ্ধি: বেনাপোল ও পেট্রাপোল স্থলবন্দর কি চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত শীর্ষক এক গবেষণা জরিপ প্রকাশ করে। ওই জরিপে এসব তথ্য উঠে এসেছে। সানেম’র চিহ্নিত সাত কারণের মধ্যে রয়েছে- স্থলবন্দরের কার্যক্রম পরিচালনায় ব্যাপ্তি, অবকাঠামো, আইন ও প্রশাসন, উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার ও পর্যাপ্ততা, দক্ষ জনশক্তি, সামাজিক ও স্থানীয় পরিবেশ, এবং অন্যান্য সুবিধাদির উপর গবেষনা জরিপ করা হয়। তাই দুই দেশের বানিজ্যিক সম্পর্ক উন্নয়নে এ দুই স্থলবন্দরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপনা স্থাপন অপরিহার্য বলেও মনে করে প্রতিষ্ঠানটি। বাংলাদেশে-ভারতের সরকারি ও বেসরকারি প্রায় ১০০ সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধির উপর পরিচালিত জরিপে বলা হয়, পেট্রাপোল স্থলবন্দরের হিসেবে বাংলাদেশ ভারত দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের ৪ বিলিয়ন ডলারের প্রায় অর্ধেকই আসে এই স্থলবন্দর থেকে। যা পাকিস্তানের সাথে ভারতের বাণিজ্যের দ্বিগুন। ভারত থেকে প্রতিদিন গড়ে ৩৫০টি ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশ করে এবং বাংলাদেশ থেকে ভারতে যায় ৭০-৮০টি ট্রাক।
কিন্তু বেসরকারি খাতের ব্যবসায়ীরা প্রায়ই ব্যবস্থাপনা, অতিরিক্ত পরিচালন সময়, প্রয়োজনীয় লোকবলের অভাব ইত্যাদি বিষয়ে অভিযোগ করেন।
গবেষণা জরিপে আরও বলা হয়, পেট্রাপোল বন্দরে প্রায় ১৫০০ ট্রাক ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্টে (আইসিপি) অপেক্ষায় থাকে। আর বেনাপোল বন্দরের যানজটের প্রধান কারন সরু রাস্তা, রাস্তার দুই পাশের ছাউনি যা দিয়ে ট্রাক প্রবেশ ও বর্হিগমণ হয়। পেট্রাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ২৪ ঘন্টা কার্যক্রম করার কথা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। ভারতের বনগাঁও থেকে বেনাপোল পর্যন্ত রাস্তা মাত্র ১০-১২ কিলোমিটার। এখানে কোন এক নির্দিষ্ট সময়ে ৩ হাজার ৫০০ ট্রাক ছাড়পত্রের অপেক্ষায় থাকে। বনগাঁও থেকে প্রতিটি ট্রাকের বেনাপোল আসতে সময় লাগে গড়ে ১৭ দিন।
এঅবস্থায় সুপারিশ হিসেবে গবেষণা জরিপে বলা হয়, বেনাপোল বন্দরের রাস্তা প্রশস্তকরণ, যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নয়ন, জায়গা সুবিধা, বিদ্যমান লোকবল বৃদ্ধি এবং পেট্রাপোল স্থলবন্দরে রাস্তা প্রশস্তকরণ, জনবলের দক্ষতা বৃদ্ধি, আইসিপিতে উন্নয়ন এবং চাঁদা আদায়কারীদের নিয়ন্ত্রণের কথা উল্লেখ্য করা হয়। সম্পাদনা : হাসান আরিফ