সমাজতন্ত্র এই বঙ্গদেশে : কীভাবে চাও বিপ্লব হে?
মাসুদ রানা
বাংলাদেশে যে রুশ সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের শতবার্ষিকী উদ্যাপন করছ, এই বিপ্লব কি তোমরা নিজদেশে চাও? কীভাবে চাও?
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ১৯১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে রোমানভ পরিবারের জারতন্ত্রের উচ্ছেদ ঘটিয়ে যখন আলেক্সান্দর কেরেনস্কির প্রোভিশন্যাল সরকার ক্ষমতা নিল, তখন লেনিন প্রবাস ছেড়ে পেত্রোগ্রাদে ফিরে এসে ‘এপ্রিল থিসিস’ লিখে বললেন, বিপ্লবকে দীর্ঘজীবী কর, থামিয়ে দিয়ও না; কেরেনস্কি সরকারকে উৎখাত করে শ্রমিক-সৈনিক-কৃষকদের সোভিয়েত বা পঞ্চায়েতে ক্ষমতা নিয়ে এসো; মিল-কারখানা, ব্যাংক-বীমা, খনি-খামার সবখান থেকে মালিকদের উচ্ছেদ করে সোভিয়েতের মালিকানা প্রতিষ্ঠা কর।
তোমরা কী সেই বিপ্লবের তাৎপর্য বুঝে সেই লক্ষ্যে রাজনীতি কর? আমি তো দেখছি, তোমরা বাংলাদেশের কেরেনস্কিদের টিকিয়ে রাখতে নিজেদের নিবেদন করেছ তাদের পায়ে নানা চেতনার নামে।
১৯৮২ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত চলা স্বৈরতন্ত্র-বিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে ছাত্র-শ্রমিক-কৃষক-কর্মচারীসহ নানা পেশার লোকদের মধ্যে গড়ে উঠেছিল আন্দোলনের সোভিয়েত বা পঞ্চায়েতের বাঙালি সংস্করণ। কিন্তু তোমরা লেনিনের মতো এই সোভিয়েতের ক্ষমতায়ন চাইলে না।
তোমরা রূপতঃ দুই রাজ-পরিবারের এক রানি ও এক রাজকন্যার মধ্যে সখ্য স্থাপনায় নিজেদের নিয়োজিত করলে। জনগণ অভ্যূত্থান করল ঠিকই। কিন্তু তোমরা তাদেরকে ক্ষমতা না পাইয়ে দিয়ে দেশটাকে পালা করে ভোগ করার ব্যবস্থা করে দিলে দুই রাজ-পরিবারের হাতে!
এই হচ্ছে তোমাদের কাহিনী। তো, এহেন তোমরা সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবটা কীভাবে করতে চাও বাংলাদেশে? বলো, শুনি তো হে!
লন্ডন, ইংল্যান্ড/ফেসবুক থেকে