বোলিংয়ে প্রত্যাশিত পারফরমেন্স নেই কেন!
মোস্তফা মামুন
বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের বোলিং ব্যর্থতার কথা আর কী বলব? বলতে গেলে প্রথমত আমরা ভালো বল করতে পারিনি। তারপরও দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে বড় ব্যবধানে পরাজিত হওয়ার মতো আমরা এতোটা খারাপ নয়। সুতরাং এখন আমাদের বুঝতে হবে যে, আমাদের দল কতটা খারাপ। আরেকটি বিষয় হলো, দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে আসলে বাংলাদেশ দল কোন জায়গায় অবস্থান করছে বা কোন জায়গায় আছে এটা আমরা উপলব্ধি করতে পারছি।
এখন বিষয়টি হচ্ছে যে, আমাদের ক্রিকেট দল দেশের মাটিতে যে সমস্ত উইকেটে খেলে সেখানে আসলে বোলিং শক্তির একটা খুব পরীক্ষা হয় না। আমাদের এখানে যে উইকেটটা থাকে সেখানে স্পিনাররা এক ধরনের বাড়তি সুবিধা পায়। আর পেসার তো তেমন কোনো সুবিধা পায় না, যার ফলে তাদের দিয়ে আমরা খুব বেশি বলও করতে দিই না। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে গিয়ে দল যে উইকেটটা পেল সেখানে স্পিনার তেমন কাজ করে না। ফলে পেসারদের ওপর এক ধরনের চাপ তৈরি হয়েছে। আসলে পেসারদের ওপর চাপ মানে এক ধরনের দায়িত্ব চলে আসে। দক্ষিণ আফ্রিকার উইকেটে বল করার জন্য যে ধরনের কৌশল জানা থাকা দরকার, আমাদের খেলোয়াড়দের সেটাও নেই। এমনকি মেন্টাল প্রস্তুতি তাদের নেই যেহেতু তারা দেশের মাটিতে বেশি বল করার সুযোগ পায় না। এট দ্যা সেইম টাইম ওই উইকেটে তাদের দল খেলায় অভ্যস্ত আবার তাদের বোলিং গতি তুলনামূলক ভাবে আমাদের দলের চেয়েও গতি থাকে অনেক বেশি। ফলে তাদের জন্য ওই উইকেটে ব্যাটিং করা অনেক সহজ হয়ে যায়। এর সঙ্গে আমাদের কিন্তু বোলিং ব্যর্থতার সঙ্গে ব্যাটিং ব্যর্থতা মাথায় রাখতে হবে। প্রথম ওয়ানডেতে যে রান সংগ্রহ করেছি সেটা বলতে গেলে ব্যাটিং ব্যর্থতা না কিন্তু আফ্রিকান ব্যাটসম্যানরা জানে যে ওই উইকেটে তিন শতাধিক রান চেস করা সম্ভব। ফলে রান যখন বাংলাদেশের কম তখনই তাদের ওপর থেকে চাপটা চলে গেছে। ফলে তারা জানে যে এ ম্যাচটা তারা জিতবে। এ ধরনের পরিস্থিতি যখন তৈরি হয় তখন তারা অনেক রিলাক্স এবং ইজিলি খেলতে শুরু করে। অন্যদিকে আমাদের বোলাদের খুব পাওয়াফুল পেস নেই। এবং তারা ওই উইকেটে যা করতে পারে তা হল বল ব্যাটে আসলেও বল বাউন্স করে। ফলে বাউন্স আদায় করার জন্য তাদের খেলোয়াড়দের শারীরিক গঠন বিশেষ করে উচ্চতাটা বেশ কাজে লাগে। তারা সহজেই বলটা কোমড়ের ওপরে তুলতে পারে। আমাদের পেসারদের ওই উচ্চতাটা নেই যার ফলে তারা বাউন্সটা আদায় করতে পারে না। এটা একটা হলো বড় সমস্যা আমাদের খেলেয়াড়দের। আরেকটা বিষয় হলো তাদের পেসারদের বল অনেকটা বুকের ওপরে ওঠে কিন্তু আমাদের ব্যাটসম্যানরা ওপরে ওঠা বল খেলে অভ্যস্ত নেই। ফলে আসলে আমাদের সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে পুরোপুরি বোলিং ব্যর্থতা বলতে পারি না। এখানে ওভারওল আমাদের ব্যাটিং ও বোলিং ব্যর্থতা। ফলে আমি মনে এটা ব্যর্থতা মনে না করে এক ধরনের শিক্ষা হিসেবে মনে রাখতে হবে। ফলে এখান থেকে শিক্ষা নিয়ে বিদেশের মাটিতে পরবর্তীতে খেলার জন্য খেলোয়াড়দের ওই ভাবেই প্রস্তুতি নিতে হবে।
পরিচিতি: ক্রীড়া বিশ্লেষক
মতামত গ্রহণ: বায়েজিদ হোসাইন
সম্পদনা: মোহাম্মদ আবদুল অদুদ