বিশেষ সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রবিজ্ঞানী প্রফেসর ড. দিলারা চৌধুরী সিইসির বক্তব্য খুবই অবাক করা বিষয় মনে হয়েছে
সাক্ষাৎকার নিয়েছেন: মোহাম্মদ আবদুল অদুদ
সিইসি বলেছেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্রের পুণঃপ্রতিষ্ঠাকারী এবং বেগম খালেদা জিয়া রাজনীতিতে নতুন ধারার প্রবর্তক। এ বিষয়ে আমার বক্তব্য হচ্ছে, প্রধান নির্বাচন কমিশনারের যে ব্যাকগ্রাউন্ড এবং রাজনৈতিক দর্শন, ওনার যে সংশ্লিষ্টতা সেটার প্রেক্ষিতে এটা আমার কাছে খুবই অবাক করা বিষয় মনে হয়েছে। আমাদের অর্থনীতির সাথে বিশেষ সাক্ষাৎকারে বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক প্রফেসর ড. দিলারা চৌধুরী এসব কথা।
তিনি বলেন, আমার নিকট আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য-বিএনপিকে নির্বাচনে আনার জন্য বলেছেন, এ কথাটাই বেশি গ্রহণযোগ্য। কারণ, বিএনপি অত্যন্ত উৎফুল্ল বোধ করেছে। সিইসি যদি বিএনপির আস্থা অর্জন করতে পারেন, বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে পারেন, তাহলে আমরা এটাকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখবো। তিনিও সিইসি হিসেবে সফল হবেন।
তিনি বলেন, নির্বাচনের পূর্বে সংসদ অবশ্যই ভেঙ্গে দেয়া উচিত। নির্বাচন একটি দেশের জন্য একটি সর্বোচ্চ রাজনৈতিক প্রক্রিয়া। সেখানে পলিটিক্যাল উইল ছাড়া এটা হয় না। সংসদকে রেখে নির্বাচন করা পৃথিবীর কোনো পার্লামেন্টারি সিস্টেমে নেই। এটি মানুষের ওপর জোর করে চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে । যারা ক্ষমতায় থাকে, তারা যদি সংসদ বহাল রাখতে চায়, এরকম ইলেকশন যথার্থ হবে না । তখন অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব নয়। অনেক মানুষই জানে না যে, সংসদ ভেঙ্গে দিতে হয়। নিউজিল্যান্ড, কানাডা, ইউকে, ইন্ডিয়া সব জায়গায় ইলেকশনের তিন মাস আগে সংসদ ভেঙ্গে দেয়। তখন আর কেউ এমপি থাকে না। কারণ, সংসদ তো ভেঙ্গে যায়। তারা খালি এটুজেড এডমিনিষ্ট্রেশনটা চালিয়ে নেয়। ইলেকশন করার যে সাহায্য প্রয়োজন তা করে। এটা তো একটা সিম্পল কমনসেন্সের ব্যাপার যে, একজন এমপি যার দাপটে আমরা টিকতে পারি না, উল্টা রাস্তা দিয়ে চলি। তার সাথে একজন সাধারন মানুষ কমপিট করবে, এটা কি সম্ভব? কেউ যদি বলে যে, এমপিকে নমিনেশন দেব না। এমপি’র যে সাগরেদ তাকে তো দেবে। তার পেছনে তো এমপি থাকবেই।
সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন তো হতে পারে না। আর দ্বিতীয়ত: হল, সেনাবাহিনীকে কিন্তু কেয়ারটেকার গর্ভমেন্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আওতায় নিয়ে এসেছিল। আওয়ামী লীগ সরকার এসে সেনাবাহিনীকে রেখেছে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে। স্ট্যাটাস হলো, তারা থাকবে, ডাকলে আসবে। আপনি যদি বাংলাদেশের বর্তমান পলিটিক্যাল সিচুয়েশনের দিকে তাকান, কালকেও দেখলাম এক আওয়ামী লীগের ছেলে খুন হয়েছে। অন্তর্দ্বন্দ্বেই তো লোক মারা যাচ্ছে। ১৪০ জন মারা গেছে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বচনের সময়ে এবং সব আওয়ামী লীগের। এজন্যই তিনি দুই পার্টির মধ্যে সহিংসতার আশঙ্কা করেন বলে জানান।
তিনি বলেন, এখন দেখছি একই দলের ভেতরে মারামারি। সেখানে সেনা না এসে কি করবে? ইলেকশন হওয়ার দুই সপ্তাহ আগেই সেনা মোতায়েন করা দরকার। ওয়েষ্ট বেঙ্গলে মমতা ব্যার্নাজী আশঙ্কা করেছিল যে, কিছু কিছু এলাকাতে সহিংসতা হতে পারে। সেখানে তারা মিলিটারী এনেছিল তিন সপ্তাহ আগে। তারা ওখানে গিয়ে লোকজনকে আশস্ত করেছে। সন্ত্রাসীদেরকে ঘরের ভেতর ঢুকিয়ে এনভায়রনমেন্ট তৈরি করেছিল। আমাদের দেশের নেতৃবৃন্দের যদি কোনো দেশাত্ববোধ থেকে থাকে, তাতে আমরা যদি জনমতের ভিত্তিতে সরকার না পাই, তাহলে আমাদের সংকট আরো জটিল হবে।
সম্পাদনা: আশিক রহমান