আজ চীনা কম্যুনিস্ট পার্টির ১৯তম সম্মেলন
কামরুল আহসান : আজ ১৮ অক্টোবর চীনা কমুনিস্ট পার্টির ১৯তম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বেইজিংয়ের গ্রেট হল অব দ্যা পিপলে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এ সম্মেলন। এ উপলক্ষ্যে বেইজিংয়ের সমস্ত ব্যবসা-বাণিজ্য সাময়িকভাবে স্থগিত করে দেয়া হয়েছে। এ সম্মেলন চীনের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। আগামী পাঁচ বছরের তাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে চীনের প্রেসিডেন্ট এবং কমিউনিস্ট পার্টির বর্তমান নেতা শি জিনপিং তার পদে অপরিবর্তিত থাকবেন। সারা দেশ থেকে ২৩০০ প্রতিনিধি এ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করার কথা ছিল। তবে শেষ মুহূর্তে তাদের মধ্যে থেকে ১৩ জনকে বহিঃষ্কার করা হয়েছে। যথাযথ আচরণবিধির অভাবে ১৩ জনকে সম্মেলন যোগদানের জন্য অযোগ্য ঘোষণা হয়েছে। বাকি সবাই সম্মেলনের জন্য বেইজিং-এর গ্রেটহলে সমবেত হবেন।
এ সম্মেলনে বেশ গোপনীয়তার সাথে সমগ্র দেশ থেকে আসা প্রতিনিধিরা কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কামিটির জন্য ২০০ সদস্য নির্বাচিত করবেন। এছাড়া কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি ২৪ সদস্য বিশিষ্ট পলিট ব্যুরো নির্বাচিত করবে। এরপর সে পলিটব্যুরো থেকে সাত সদস্য বিশিষ্ট স্ট্যান্ডিং কমিটি করবে কেন্দ্রীয় কমিটি। চীনের রাষ্ট্র ক্ষমতা পরিচালনার জন্য এ স্ট্যান্ডিং কমিটি হচ্ছে সর্বসময় ক্ষমতার অধিকারী। স্ট্যান্ডিং কমিটির কর্মপদ্ধতি সব সময় গোপন থাকে। তবে ধারণা করা হয়, স্ট্যান্ডিং কমিটি প্রায়ই বৈঠকে বসে। সে বৈঠকে সিনিয়র নেতারা প্রথমে বক্তব্য রাখেন এবং তাদের মতামত তুলে ধরেন। কোন একটি বিষয় সবাই যাতে ঐকমত্যে পৌঁছতে পারে সেজন্য জোর দেয়া হয়। কিন্তু যদি সেটা না হয় সেক্ষেত্রে সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতকে প্রাধান্য দেয়া হয়। বিভিন্ন নীতি নির্ধারণ বিষয়ে স্ট্যান্ডিং কমিটির সভায় বিতর্ক এবং মতপার্থক্য হলেও সেগুলো জনসম্মুখে আসে না । কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি দলটির শীর্ষ নেতা অর্থাৎ সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করে। দলের সাধারণ সম্পাদকই দেশের প্রেসিডেন্ট হন। ধারণা করা হচ্ছে, চীনের বর্তমান প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং আবারো দলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হবেন এবং তিনি দেশের প্রেসিডেন্ট থাকবেন।
কমিউনিস্ট পার্টি অব চায়না (সিপিসি) গঠিত হয় ১৯২১ সালে। এরপর দলটি অনেক বাধাবিপত্তি পার হয়ে আজকের এ পর্যায়ে আসে। সামনেই তারা দলটি ১০০ বছর পূর্তি উপযাপন করবে। ১৯৭৮ সালে সংস্কার এবং উন্মুক্তকরণ নীতি গ্রহণের পর চীন ৭০ কোটি মানুষ দারিদ্রতা থেকে মুক্তিলাভ করেছে। ২০২০ সালের মধ্যে সমগ্র দেশ দারিদ্রমুক্ত করাই এখন দলটির লক্ষ্য। বর্তমানে চীন বিশ্বের দ্বিতীয় অর্থনৈতিক শক্তিশাল দেশ। শুধু নিজের দেশ নয়, নিজের অঞ্চল ছাড়িয়েও আজ তার ক্ষমতা বিশ্বব্যাপী প্রসারিত। সে লক্ষ্যেই দলটি কাজ করে যাচ্ছে। ২০১২ সালের সিপিসি অষ্টাদশ কংগ্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ‘কমিউনিস্টদের বিশ্বাস মার্কসবাদে, সমস্তরকম বৈরী পরিস্থিতিতেও সমাজতন্ত্র তার রাজনৈতিক আত্মা টিকিয়ে রাখে।’ দেশ ও মানবতার মুক্তির লক্ষ্যেই চীনা কমিউনিস্ট পার্টি কাজ করে যাচ্ছে, ভবিষ্যতেও তাদের লক্ষ্য হবে মানবকল্যাণ সেরকম প্রত্যই ব্যক্ত করলেন চীনের জাতীয় কংগ্রেস কমিউনিস্ট দল।
দ্যা কনভারশেসন, বিবিসি, দ্য স্ট্রেইট টাইমস, ইউকিপিডিয়া