সুচির রাজনৈতিক প্রতারণার একটি ঐতিহাসিক দলিল
এ ছবিটি ইতিহাসের অবিশ্বাস্য জবানবন্দি দেয়। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক বার্মার জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্রভূমি ছিল রেঙ্গুন বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র ইউনিয়ন (আরইউএসইউ) নেতারা বসে আছেন ছবিতে। এটা ১৯৩৬ সালের ছবি। মাঝের উঁচু চেয়ারে বসা ব্যক্তিটি হলেন এম এ রশিদ। তার ডানের ব্যক্তিটি ভবিষ্যতের জেনারেল অং সান (আজকের সুচির বাবা) এবং বাঁয়ের ব্যক্তিটি হলেন ভবিষ্যতের সেনাশাসক জেনারেল উ নু। তিনজন ছিলেন প্রাণের বন্ধু এবং তখন রেঙ্গুন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আন্দোলনের মূল স্তম্ভ। এরাই পরে ‘অল বার্মা স্টুডেন্টস ইউনিয়ন’ গড়ে তুলেছিলেন এবং এম এ রশিদ ছিলেন এর সভাপতি। এম এ রশিদকে অং সান বলতেন ‘রশিদ ভাই’। অং সানের অস্বাভাবিক মৃত্যুর দিন পর্যন্ত তাদের এই রাজনৈতিক বন্ধুত্ব বজায় ছিল।
বার্মার সংবিধানের অন্যতম খসড়াকারী ছিলেন এম এ রশিদ। পরবর্তীকালে তিনি দেশটির শ্রমমন্ত্রী হন। রশিদের মতোই অং সানের আরেক গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সহযোগী ছিলেন আবদুল রাজ্জাক। যিনি অং সানের সঙ্গেই ১৯৪৭-এর ১৯ জুলাই মারা যান। এই দিনটি বার্মা শহীদ দিবস হিসেবে পালন করে থাকে। রাজ্জাক ছিলেন বার্মা মুসলিম কংগ্রেসের সভাপতি। অং সান, রশিদ, উ নু, রাজ্জাক প্রমুখের বন্ধুত্ব স্বাধীনতার উষালগ্নে বার্মায় ‘বৈচিত্র্যের মাঝে ঐক্য’র যে সম্ভাবনা তৈরি করেছিল আজ যে তার অবসান ঘটেছে সেটা বলাই বাহুল্য। বাবার (অং সান) ইতিহাস এবং উত্তরাধিকার মেয়ের (সুচি) এভাবে ছুঁড়ে ফেলা ইতিহাসের এক নিষ্ঠুর তামাশা। আজকে যখন মিয়ানমার রাষ্ট্র বলেÑরোহিঙ্গা মুসলমানরা আরাকানের কেউ নয়, তখন এটাকে বুঝতে হবে ইতিহাসের নির্লজ্জ মিথ্যাচার হিসেবে। সংগৃহীত