প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এলে তদন্তের সুযোগ রয়েছে
মাননীয় প্রধান বিচারপতি অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়ার পূর্বে নিজেকে সুস্থ দাবি করলেও গণমাধ্যমকে দেওয়া লিখিত বক্তব্যের কোথাও কিন্তু বলেননি যে, তিনি অসুস্থতার কারণে ছুটির আবেদন করেননি। সেই বক্তব্যে তিনি লিখেননি যে, তিনি ছুটির জন্য যে আবেদন করেছেন, যা নিয়ে কেউ কেউ বিতর্ক তৈরি করেছে তা সঠিক বা বেঠিক এ নিয়ে কোনো ধরনের মন্তব্য করেননি। যেহেতু এ ব্যাপারে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি সেহেতু এটাই ধরে নিতে হবে যে উনার (ছুটির) আবেদনের প্রতিপাদ্য বিষয় বিবেচনা করেই ছুটি মঞ্জুর করা হয়েছে।
শুধুমাত্র নৈতিক স্খলন নয়, বিচারকদের কোড অব কন্ডাক্ট রয়েছে অর্থাৎ আচরণবিধি। এই আচরণবিধির যেকোনো একটির ব্যত্যয় ঘটলে শপথ ভঙ্গ হয়। দেশ ছাড়ার আগে তিনি বলেছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ভুল বোঝানো হয়েছে। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের প্রধান হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনিও শপথ গ্রহণ করেছেন। এখন প্রধানমন্ত্রীকে ভুল বোঝানো হয়েছে মানে কি তিনি (প্রধানমন্ত্রী) অন্যের বোঝানো ভুল গ্রহণ করেন কিংবা তিনি ভুল বোঝানো দ্বারা প্রভাবিত হন? এ জাতীয় অভিযোগ করে প্রধান বিচারপতি কার্যত নিজের শপথই ভঙ্গ করেছেন।
আইনের দৃষ্টিতে বাংলাদেশে কেবলমাত্র রাষ্ট্রপতি দায়িত্বপালনকালীন সময়ে সমস্ত দায় থেকে মুক্তি পেতে পারেন এছাড়া অন্য কেউ কোনো দায় থেকে মুক্ত হওয়ার সুযোগ নেই। প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে দুর্নীতি বা এ ধরনের কোনো অভিযোগ এলে তা তদন্তের সুযোগ রয়েছে। আর এই প্রক্রিয়ায় দেশের স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) স্বপ্রণোদিত হয়ে অনুসন্ধান করবে। অনুসন্ধানে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেলে দুদক এজাহার রুজু করবেন। এরপর তদন্তের মাধ্যমে অভিযোগের পক্ষে যথেষ্ট তথ্য-উপাত্ত পেলে চার্জশিট দাখিল করবেন। এ ক্ষেত্রে আলাদাভাবে কাউকে বাদী হওয়ার প্রয়োজন পড়বে না। দুদক নিয়েই বাদী হয়ে মামলা করতে পারবে।
পরিচিতি : আইন সম্পাদক, আওয়ামী লীগ ও সদস্য, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের
সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ড. বদরুল হাসান কচি