সাক্ষাৎকারে স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ নির্বাচন কমিশন বিএনপিকে গুরুত্ব দেওয়ায় একটা আস্থার পরিবেশ তৈরি হবে
খন্দকার আলমগীর হোসাইন : আগামী জাতীয় নির্বাচন যাতে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়, দল অংশগ্রহণ করে সেই লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন যে সংলাপ করছে, তাতে তাদের আন্তরিকতা দেখা যাচ্ছে। এই আন্তরিকতাটা খুব ভালো। সবাই আশা করছে, ধারাবাহিকভাবে এ আলোচনা চলবে। এবং রাজনৈতিক দল ও নির্বাচন কমিশনের মধ্যে যে দূরত্ব এক সময় তা ধীরে ধীরে কমতে শুরু করবেÑ আমাদের অর্থনীতিকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করেন স্থানীয় সরকার বিষেশজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের এখনকার কর্মকা-, তাদের কথাবার্তা ভালোই মনে হচ্ছে। প্রশ্ন হচ্ছে, পরিবেশ-পরিস্থিতি কখন ডান, কখন বাম দিকে যায় সেটা বোঝা মুশকিল। তবে সংলাপ বা আলোচনা হওয়াটা ভালো। আলোচনা হলে পরস্পর পরস্পরকে জানতে, বুঝতে পারে। প্রত্যেকের অবস্থান পরিবর্তন করতে সুবিধা হয়। আলোচনা হলে খুবই উপকার হয়। পরিবেশটাকে সহজ করে। আমি মনে করি, ইসির সঙ্গে বিএনপির যে আলোচনা বা সংলাপ হয়েছে তাতে বরফ গলেছে।
তিনি আরও বলেন, বিএনপির তরফ থেকে বলা হয়েছে, তাদের সঙ্গে আলোচনাটাকে গুরুত্ব দিয়েছে ইসি। তাদের কথাগুলো শুনেছে গুরুত্ব দিয়ে, এটা ভালো। এই যে গুরুত্ব দেওয়া, সাড়া দেওয়া এর ফলে একটা আস্থার পরিবেশ তৈরি হবে। এই ভালো শুরুটার ধারাবাহিকতা বজায় থাকতে হবে, রাখতে হবে। যাতে পেছনের ক্ষতগুলো আর সামনে না আসে। পেছনে নির্বাচন কমিশনের অনেক খারাপ ইতিহাস রয়েছে, এসব সাধারণ মানুষও আর দেখতে চান না। বিএনপির এখানে সুপারিশ আছে, শর্তও আছে, দাবিও আছেÑ এগুলো যে হুবহু মানা হয়ে যাবে, তা হয়তো বিএনপিও আশা করে না।
ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, সামনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে সামনে এগোনো যাবে না। আমরা এরই মধ্যে অনেক ক্ষতির মধ্যে পড়ে গেছি। একটা সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে, যে সরকারই আসুক, সে সরকার যদি গ্রহণযোগ্য সরকার না হয়, বাইরের দেশগুলোর সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক, কাজ করা অনেক কঠিন হয়ে যাবে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে আন্তর্জাতিক ভূমিকা দেখুন, আর এখনকার রোহিঙ্গা ইস্যুতে চীনের ভূমিকাÑ এগুলো আমাদের মনে রাখতে হবে।
তিনি বলেন, জাতিগতভাবে আমরা আশা করতে পারি না, যেনতেনভাবে একটা নির্বাচন হবে। এখনো শেষ কথা বলার সময় আসেনি। ১৮ তারিখ আওয়ামী লীগ ইসির সঙ্গে সংলাপে বসবে, তারা টেবিলে একটা জিনিস রাখবেন, বিএনপির সঙ্গে অনেকগুলো মিলবে না, সাংঘর্ষিক হবে অথবা মিলতেও পারে। ১৪ দলীয় জোটের অন্য শরীকদের সঙ্গেও নির্বাচন কমিশনের যে আলাপ হয়েছে তাতে একটা সিলভার লাইন দেখা যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর মধ্যেও একটা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করার সদিচ্ছা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সম্মিলিত প্রয়াস, সহযোগিতা থাকলে আকাক্সিক্ষত সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব বলেও মনে করেন এই বিশ্লেষক।
সম্পাদনা : আশিক রহমান