দুই মাসে ২৬ নৌকাডুবিতে ১৮২ রোহিঙ্গার মৃত্যু
এম আমানুল্লাহ, কক্সবাজার : মিয়ানমার থেকে রাতের অন্ধকারে নৌকায় ঝুঁকিপূর্ণ পারাপার শত কড়াকড়ির পরও থামানো যাচ্ছে না। এ কারণে রোধ করা যাচ্ছে না নৌকাডুবির ঘটনাও। ফলে বাড়ছে রোহিঙ্গা নারী-শিশু ও পুরুষের লাশের মিছিল। সোমবার ভোররাতে রোহিঙ্গা বোঝাই আরও একটি নৌকা টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপ উপকূলে এসে ডুবে যায়। এতে সকাল ৮টা থেকে গতকাল পর্যন্ত ১৩ রোহিঙ্গার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়াদের মাঝে ছয় নারী ও পাঁচজন শিশু রয়েছে। এ ঘটনায় জীবিত ২১ জনকে উদ্ধার করা হয়। ১৬আগস্ট থেকে ১৬অক্টোবর এই দুই মাসে রোহিঙ্গা বোঝাই ২৬টি নৌকাডুবির ঘটনায় এ পর্যন্ত সর্বমোট ১৮২ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এসব নৌকাডুবির ঘটনা স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ জনগণকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলছে।
রাখাইনে এখনও নিপীড়ন ও পাশবিকতা চলমান থাকায় মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে রোহিঙ্গারা প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসছে বলে উল্লেখ করেছেন জীবিত উদ্ধার হওয়ারা।
অপর একটি সূত্র জানায়, গত শুক্রবার দিবাগত রাত ১১টার দিকে শাহপরীর দ্বীপের গোলারচর এলাকায় রোহিঙ্গা বোঝাই দুটি নৌকা তীরে ভিড়ে। ওই দুই নৌকায় ১৯ জন পুরুষ, ১৭ নারী ও ২২ জন শিশু ছিল। আর নৌকাগুলো তীরে ভেড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিজিবি নৌকা দুটির যাত্রী ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৯ মাঝিকে আটক করে ক্যাম্পে নিয়ে যায়।
কোস্টগার্ড শাহপরীর দ্বীপ স্টেশন কমান্ডার লে. জাফর ইমাম শরীফ জানিয়েছেন, সোমবার সকাল ৮টার দিকে সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ পশ্চিম পাড়া বেড়িবাঁধ ভাঙার কাছাকাছি সাগর থেকে প্রথমে ৮টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে বেলা ১১টার দিকে আরও তিনটি মরদেহ ভেসে আসার খবর পেয়ে তা উদ্ধার করা হয়েছে।
সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর হোসেন জানান, গত ৮ অক্টোবর মধ্যরাতে শাহপরীর দ্বীপ গুলারচরে রোহিঙ্গা বোঝাই একটি নৌকাডুবির ঘটনায় ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত ৩৮ মরদেহ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। হিসাব মতে, গত দুই মাসে নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগরে রোহিঙ্গা বোঝাই ২৬টি নৌকাডুবির ঘটনায় ১৮২ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৮১ জন রোহিঙ্গা। অন্যজন বাংলাদেশি নৌকার মাঝি। রোহিঙ্গাদের লাশের মধ্যে ৯১ জন শিশু, ৬২ জন নারী ও ২৯ জন পুরুষ। উদ্ধার হওয়া স্থানে কাছাকাছি কবরস্থানেই তাদের দাফন করা হয়েছে। সম্পাদনা : মাহফুজ উদ্দিন খান