মাননীয় প্রধান বিচারপতির মানসিক ভারসাম্যহীনতা দেখা দিয়েছে
ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ
আমার মনে হয়, মাননীয় প্রধান বিচারপতির মানসিক ভারসাম্যহীনতা দেখা দিয়েছে। কারণ, তিনি এর আগেও এক মুখে দুই কথা বলেছেন। ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ে তিনিই এক জায়গায় বললেন, বিচার বিভাগ স্বাধীন, আবার তিনিই বলছেন, সরকারের চাপে তিনি বিব্রত। একদিকে তিনি বলছেন, বিচার বিভাগ স্বাধীন থাকা উচিত, অন্যদিকে তিনিই আবার ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির কি করা উচিত, আর কী করা উচিত নয়, সেটা মনে করিয়ে দিয়ে বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করছেন। ষোড়শ সংশোধনীতে যে ব্যক্তি বলেছেন, দেশের সংসদ অপরিপক্ক, জনপ্রতিষ্ঠান অকার্যকর আবার তিনিই বলছেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী প্রধানমন্ত্রী। একবার তিনি বলছেন, চাপকে ভয় পান না, আবার বলছেন চাপে বিব্রত হয়ে তিনি বিদেশ চলে যাচ্ছেন! ফলে ছুটির আবেদনে প্রধান বিচারপতি অসুস্থতার কথা উল্লেখ করলেও দেশ ত্যাগের আগে লিখিত বক্তব্যে নিজেকে সুস্থ দাবি করায় আমার কাছে মনে হয়েছে, উনার মানসিক ভারসাম্যহীনতা দেখা দিয়েছে ।
এ সমস্ত অভিযোগ প্রমাণিত হলে নিঃসন্দেহে শপথ ভঙ্গ হবে। তবে এক্ষেত্রে তদন্তের অবকাশ রয়েছে। অনেকেই ইনিয়ে বিনিয়ে বলছেন, এত অভিযোগ থাকলে বিচারের মুখোমুখি না করে উনাকে (প্রধান বিচারপতিকে) বিদেশ যেতে দেওয়া হলো কেন? আমি বলব, আমাদের সংবিধানে প্রিজামশন অব ইনোসেন্স এর একটা ব্যাপার রয়েছে। ফলে উনার দুর্নীতির অভিযোগের বিরুদ্ধে বিচারিক কোনো কর্মকা- কিন্তু এখনো শুরু হয়নি। কেউ আইনের উর্ধ্বে নন। উনার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ দুদক নিজেও তদন্ত করতে পারে এবং অভিযোগের সত্যতার উপর ভিত্তি করে দুদক আইনে বিচার হতে পারে। এছাড়া অপরাধ যদি ফৌজদারি হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে দেশের প্রচলিত আইনেও আদালতে বিচার হতে পারে।
পরিচিতি: প্রসিকিউটর, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুন্যাল ও চেয়ারপার্সন, আইন বিভাগ, ইস্ট-ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি
সাক্ষাৎকার নিয়েছেন : ড. বদরুল হাসান কচি
সম্পাদনা: আশিক রহমান