চীনা কমিউনিস্ট পার্টির কংগ্রেসে ৩ ঘন্টার ভাষণে জাতীকে পুনঃ প্রতিষ্ঠার ডাক দিলেন শি জিনপিং
কামরুল আহসান : চীনা কমিউটিনস্ট পার্টির জাতীয় কংগেসের ১৯ তম সম্মেলনে ৩ ঘন্টার এক দীর্ঘ ভাষণ দিয়ে জাতীকে পুনঃপ্রতিষ্ঠার ডাক দিলেন দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট এবং দলটির বর্তমান চেয়ারম্যান শি জিনপিং। কথা হতে পারে চীন তো অর্থনীতিতে বেশ এগিয়েই আছে, বর্তমানে দেশটি পৃথিবীর দ্বিতীয় অর্থনৈতিক শক্তি, তাহলে আর কী পুনঃপ্রতিষ্ঠা তিনি করতে চান? তিনি বলেন, তার তত্ত্বাবধানে দেশটি গত পাঁচ বছরে যথেষ্টই উন্নতি করেছে। এ সময়ের মধ্যে তারা সিল্ক রোডের মতো বিশাল প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। বাণিজ্য বাড়িয়েছে পৃথিবীর নানা প্রান্তে। কিন্তু, শি জিনপিং চান আরো উন্নতি করতে, সবাইকে ছাড়িয়ে যেতে। তিনি এমনও বলেছেন, পশ্চিমাদের মতো ম্যারাথন দৌড়ে তাদের অংশ নিলে হবে না। তাদের আরো দ্রুত যেতে হবে। দেশের দরিদ্রতা পুরোপুরি দূর করতে চান, বেকারত্ব পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন করতে চান, বাড়াতে চান আঞ্চলিক নিরপত্তা।
চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে ১৮ অক্টোবর থেকে শুরু হয়েছে সপ্তাহব্যাপী এ সম্মেলন। সম্মেলনে অংশ নিচ্ছে দলটির দুই হাজারের বেশি সদস্য। ১৩ জনকে বাতিল করে দেয়া হয়েছে তাদের যথাযথ আচরণবিধির অভাবে। এই দুই হাজার সদস্য থেকেই অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে নির্বাচন করা হবে ২০০ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রিয় কমিটি। তারপর ২৪ সদস্য বিশিষ্ট পলিট ব্যুরো নির্বাচন করবে সাত সদস্য বিশিষ্ট স্যান্ডিং কমিটি। এ স্ট্যাডিং কমিটি হচ্ছে চীনের রাষ্ট্র ক্ষমতা পরিচালনার জন্য সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। এ স্ট্যাডিং কমিটিই নির্বাচন করবে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট, আগামী পাঁচ বছর চীনের ক্ষমতা কার হাতে থাকবে । ধারণা করা হচ্ছে শি জিনপিংই তার দায়িত্বে বহাল থাকবেন। ২০১২ সালে তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন।
শি জিনপিং তার বক্তব্যে বলেন, আমাদের দল, আমাদের জনগণ, আমাদের শক্তি, আমাদের জাতি প্রেসিডেন্ট ছাড়াই এগিয়ে গেছে। পশ্চিমাদের মতো আমাদের দেশ কোনো বিশেষ নেতার ওপর নির্ভর করে না। প্রেসিডেন্ট এখানে প্রতীকমাত্র। আমরা সবার সহযোগিতা পরামর্শেই কাজ করি।
চীনা কমিউনিস্ট পার্টি আর তিন বছর পরেই তাদের দল গঠনের একশো বছর পালন করতে যাচ্ছে। ১৯২১ সালে দলটি গঠিত হয়েছিল। এর মধ্যে অনেক চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে দলটি আজকের এ অবস্থানে এসেছে। দলটি এখন শুধু নিজের দেশ নয়, সমগ্র পৃথিবীকে সঙ্গে নিয়েই এগিয়ে যেতে চাচ্ছে। সে নীতিতে কাজ করছে বলেই ব্যক্তির চেয়ে দল, দলের চেয়ে দেশ এবং দেশের চেয়ে পৃথিবীর মানুষের স্বার্থই তাদের প্রধান বিবেচ্য বিষয়, শি জিনপিং তার তিনঘন্টার বক্তব্যে এমনই জানিয়েছেন। সিএনএন