বুটিকস কর্মী টুম্পার ঘাতক স্বামী গ্রেফতার
ইসমাঈল হুসাইন ইমু : রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বুটিকস দোকানের কর্মচারী জেসমিন আক্তার টুম্পার ঘাতক স্বামী সবুজকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। মঙ্গলবার রাতে র্যাব-২ এর একটি দল যশোর থেকে তাকে গ্রেফতার করে। গতকাল বুধবার র্যাব-২ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে উপ-অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ আলী এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, গত রোববার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে মোহাম্মদপুর থানাধীন এক্স-২৩, রাজিয়া সুলতানা রোডস্থ ‘নব্য’ নামক বুটিকস হাউজের বিক্রয়কর্মী রোকসানা আক্তার টুম্পাকে ছুরকাঘাত করে তার স্বামী সবুজ। পরে তাকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নিহতের বাবা আবুল বাশার সবুজকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
আর ঘটনার পর সবুজ পালিয়ে যায়।
জিজ্ঞাসাবাদে সবুজ জানিয়েছে, রোকসানা আক্তার টুম্পা তার দ্বিতীয় স্ত্রী। টুম্পার সাথে তার ১ম বিয়ের আগে পরিচয় ও প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু টুম্পার পরিবার এ সম্পর্ক মেনে না নিয়ে তার এক ফুফাতো ভাইয়ের সঙ্গে বিয়ে ঠিক করে। এদিকে সবুজও অন্যত্র বিয়ে করে। কিন্তু টুম্পার সাথে সবুজের আগের সম্পর্ক বজায় রাখে। এক পর্যায়ে ১ম বিয়ের ৬ মাস পরে টুম্পা নিজের বাবা-মায়ের অমতে সবুজ এর ১ম স্ত্রীকে মেনে নিয়ে বিয়ে করার জন্য নিজ বাড়ী থেকে পালিয়ে বিয়ে করে। বিয়ের বছর খানেক পর তেকে তাদের দাম্পত্য কলহ সৃষ্টি হয়। ছোটখাট বিষয় নিয়ে মনোমালিন্য, বাকবিতন্ডা ও বিবাদে জড়িয়ে পড়ে তারা। এতে অতিষ্ঠ হয়ে টুম্পা সবুজকে ২ বছর পরে ডিভোর্স দেয়। ডিভোর্স হওয়ার কিছুদিন পরে তারা আবার মান-অভিমান ভুলে গিয়ে পুনরায় সাভারের একটি কাজী অফিসে গিয়ে বিয়ে করে। সবুজ শপার্স ওয়ার্ল্ডে এবং টুম্পা মিরপুর বুটিকস ফ্যাশনে বিক্রয়কর্মী হিসাবে যোগদান করে এবং তারা উভয়ে মিরপুরের একটি ভাড়া বাসায় দাম্পত্য জীবন অব্যাহত রাখে। সবুজের সন্দেহমুলক মনোভাব এর কারণে আবারও তাদের মধ্যে অশান্তি সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে নব্য বুটিকসের মধ্যে বাক বিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে উভয়েই। পরে চাকু দিয়ে টুম্পাকে আঘাত করে পালিয়ে যায় সবুজ। নিজেকে আত্মগোপন করার জন্য সে প্রথমে পল্টন, যাত্রাবাড়ী হয়ে চট্টগ্রাম পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে সে ভারত পালিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে যশোরে অবস্থান করতে থাকে। এ অবস্থায় তার অবস্থান নিশ্চিত হয়ে র্যাব-২ এর আভিযানিক দল যশোরের এস আর হোটেল (আবাসিক) থেকে গ্রেফতার করে।